Friday, December 5, 2014

Thousand dollar from google adsense

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে মাসে হাজার ডলার

আমি রাশেদ হাসান আকাশ। কাজ করছি দেড় বছর যাবৎ গুগল অ্যাডসেন্স নিয়ে। আজকে যে লেখাটা লিখছি অনেকের কাছে তা হয়তো গল্প মনে হতে পারে; কিন্তু একবিন্দুুও মিথ্যে নয়। মাত্র বছর খানেক কাজ করেই আজ আমি প্রতি মাসে হাজার ডলারের মতো আয় করছি। আমার ছোট্ট এই সফলতাটুকু কীভাবে এল তা নিয়ে বিস্তারিত জানাতেই আজকের এই লেখা।

যেভাবে আমার ইন্টারনেট জগতে আগমন

২০০৯ সালের শেষের দিকে, তখন আমি একটি কোচিং সেন্টারে একজন কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করি। তখনই প্রথম ইন্টারনেট-এর সাথে আমার পরিচয়। আর তখন থেকেই আমি ইন্টারনেট সম্পর্কে জানি। এর কিছুদিন পর আমি একটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলি। এটাই ছিল ইন্টারনেটে আমার প্রথম কাজ। তবে এটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিলাম অনেক দিন।

এক দিনের ঘটনা

AIUB-এর এক বড় ভাই আমার কম্পিউটারে একটা ভাইরাস ঢুকিয়ে দিল। আমি যখনই কম্পিউটার অন করি, ১০/১৫ সেকেন্ড পড়ে আবার বন্ধ হয়ে যায়। মাথায় কিছুই ঢুকছে না। কেন এমন হচ্ছে? কি ধরতে পেরেছেন? হ্যাঁ, তিনি আমার কম্পিউটারে একটা অটোরান ভাইরাস স্টার্টআপে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য উনিই সেটা ঠিক করে দেন। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কীভাবে করেছেন? তিনি আমাকে বললেন, টেকটিউনস নামে একটা ব্লগ আছে সেখান থেকে শিখেছি। আমি উনার কাছে লিঙ্ক চাইলাম। উনি আমাকে লিঙ্ক দিলেন। বুঝতেই পারিনি মুরসালিন ভাই (AIUB-এর ওই ভাইয়ের নাম ছিল মুরসালিন) আমাকে আসলে ব্লগের লিঙ্ক নয়, আমার লাইফের মোড় ঘুরানোর লিঙ্ক দিয়েছেন। তখন সারা দিন টেকটিউনস নিয়েই পড়ে থাকতাম। রাত জেগে জেগে লেখা পড়তাম। হঠাৎ একদিন চোখে পড়ল ‘ডেভসটিম লিমিটেড’ এর কো-ফাউন্ডার তাহের চৌধুরী সুমন ভাইয়ের ব্লগিং শুরু করা নিয়ে একটি লেখা। লেখাটা পড়তে আমার এতটাই ভালো লাগল যে, আমি সেদিনই উনার সমস্ত লেখাগুলো খোঁজা শুরু করলাম। পেয়েও গেলাম অ্যাডসেন্স নিয়ে উনার লেখাগুলো। ব্যস, আর যায় কোথায়? গারা দিন এগুলো পড়ি আর স্বপ্ন দেখি আমিও একদিন অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করব। কিন্তু কীভাবে শুরু করব এটাই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কথায় আছে, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ঘাঁটতে ঘাঁটতে সুমন ভাইয়ের ফেসবুক আইডি পেয়ে গেলাম। দিলাম ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট! এরপর? সুমন ভাই আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই আমি ব্লগিং শিখতে চাই। আমি কীভাবে শুরু করব?’ সুমন ভাই আমাকে বললেন, ‘তুমি কী কী জানো?’ আমার সোজাসাপ্টা উত্তর, আমি কিছুই জানি না। সুমন ভাই তখন বললেন, ব্লগিং করতে গেলে আমাকে জানতে হবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা কোনো সিএমএস সাইট ডিজাইন করার জন্য, জানতে হবে লেখালেখি এবং সাইটকে প্রমোট করার বিষয়গুলোও। উনি আমাকে বেশ কয়েকটা সাইটের লিঙ্কও দিলেন। এরপর শুরু করলাম ওয়েব ডেভেলপিং শেখা। মোটামুটি শেখার পর সুমন ভাইকে নক করলাম। উনি সাজেস্ট করলেন আমার জানাশোনা আছে এমন কোন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে। এবার আরেকটা টেনশনে পরলাম। অ্যাকাউন্ট তো খুললাম, কিন্তু কী বিষয়ে আমি ব্লগিং করব? কারণ আমার জানাশোনার বিষয়গুলো খুবই কম।

বিষয় নির্বাচন নিয়ে মহা বিপদ

বিষয় খুঁজে পাচ্ছি না। মহা টেনশন! অবশেষে আবার আরেক ত্রাণকর্তার খোঁজ পেলাম। এবার কে জানেন? জিন্নাতুল হাসান ভাইয়ের বাংলা ব্লগ। সেখানে এক লেখকের লেখায় জানতে পারলাম, ‘আপনি যে বিষয়টি খুব ভালো জানেন, সে বিষয়টি নিয়েই ব্লগিং শুরু করেন।’ ঠিক সুমন ভাইয়ের মতোই উত্তর। আবার চিন্তা শুরু করলাম, আমি কোন বিষয়টা ভালো জানি? আমার কাছে মনে হয় আমি কিছুই জানি না। আবার মনে হয় দুনিয়ার সবই জানি। হা হা হা! আমি তখন প্রচুর বই পড়তাম। আচমকা মাথায় আইডিয়া এল, আমি যদি ই-বুক নিয়ে সাইট করি কেমন হয়? যেই ভাবা, সেই কাজ। শুরু করলাম ই-বুক নিয়ে কাজ। অবশেষে একটা সাইট দাঁড় করালাম ই-বুক নিয়ে। সাইটে তো বই আছে ঠিকই কিন্তু ভিজিটর কই?

সাইটে ভিজিটর নেই এখন উপায়?

কিছুদিন পর সুমন ভাইকে আবার মেসেজ দিলাম, ‘ভাই, আমি তো সাইট করেছি কিন্তু ইনকাম কই?’ সুমন ভাই বুঝিয়ে বললেন, সাইটে ইনকাম করতে হলে প্রথমেই দরকার প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর। আমার সাইটে যত বেশি ভিজিটর আসবে তত দ্রুত আমার ইনকামের রাস্তা খুলবে। আর যায় কোথায়! শুরু করলাম ফেসবুকে, যেখানে-সেখানে আমার সাইটের লিংক পোস্ট করা। যার-তার সাইটে স্প্যামিং করা। কিন্তু ভিজিটর আসছেই না! যদিও আসে কিন্তু তারা থাকে না, চলে যায়। এখন উপায়? ইতিমধ্যে আমি অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্লাইও করে ফেলেছি কিন্তু পাইনি।

পড়লাম নতুন সমস্যায়

একে তো সাইটে ভিজিটর নেই এই চিন্তায় আমি অস্থির, তার ওপর আবার হঠাৎ করে সুমন ভাই বললেন, তুমি যদি এভাবে করো তাহলে হবে না। তুমি যদি ব্লগিংকে পেশা হিসেবে নিতে চাও তাহলে Domain Hosting কিনে শুরু করো। এদিকে আমার বিশ্বাসে আস্তে আস্তে চির ধরতে শুরু করেছে, আমার পক্ষে হয়তো এসব সম্ভব হবে না। কিন্তু সুমন ভাইয়ের কথাগুলো আমি বিশ্বাস করতাম। তাই তাঁর কথা মতো ডোমেইন হোস্টিং কিনেই শুরু করলাম। আমি তত দিনে জুমলা শিখে গেছি। প্রথম ওয়েবসাইটটা বানালাম জুমলা দিয়ে। কিন্তু সমস্যাটা রয়েই গেল। সাইটে ভিজিটর নেই। আগেই জেনে গেছি যে, সাইটে ট্র্যাফিক (ভিজিটর) না থাকলে টাকাও নেই! সুতরাং সাইটের ভিজিটর বাড়ানো আমার জন্য অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শুরু হলো এসইও শেখা

সাইটে ভিজিটর নেই কেন? কী করে সাইটে ভিজিটর বাড়ানো যায়? এসব নিয়ে যখন খুবই চিন্তায় আছি তখনই পাশে এসে দাঁড়ালেন সুমন ভাই। জানালেন এসইও-এর কথা। কিওয়ার্ড রিসার্স, অনপেইজ অপটিমাইজেশন, অফপেইজ অপটিমাইজেশন আরও কত কী! তাঁর লেখাগুলো এবং ইন্টারনেট থেকেও এসইও নিয়ে পড়াশোনা করতে বললেন। তাঁর কথামতো শুরু করলাম এসইও শেখা। যতটুকু শিখি ততটুকু আমার সাইটে অ্যাপ্লাইও করি। মাত্র ১০-১৫ দিনের মধ্যেই দেখি আমার সাইটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিজিটর আসা শুরু করেছে। মুখের হাসিটাও আস্তে আস্তে ফুটতে শুরু করছে। কিন্তু ইনকাম কই?
দেখতে দেখতে ৭-৮ মাস পার হয়ে গেল। আমার সাইটে এখন অনেক ভিজিটর (দৈনিক ১০০০ পেইজভিউ)। সুমন ভাই বলল, এবার অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্লাই করো। করলাম, কিন্তু পেলাম না। সুমন ভাইকে জানালাম। তিনি সাইট দেখে বললেন, সাইটের ডিজাইন পরিবর্তন করো আর বাংলা লেখাগুলো ডিলিট করো। উনার কথামতো সব ঠিকঠাক করে আবার অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্লাই করলাম। চার দিন পর রিপ্লাই এল, আমার অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ হয়নি। কারণ Unacceptable content. আবার সুমন ভাইয়ের শরণাপন্ন হলাম। তিনি বললেন, আমি অ্যাডসেন্সের নীতিমালা পড়েছি কি না? আমি বললাম, না। তখন সুমন ভাই আমাকে বললেন, তুমি আমার আগের পোস্টগুলো আবার পড়ো। সেখানে সুমন ভাইয়ের কিছু লেখা দেখে বুঝতে পারলাম আমার সাইটে আরও ভালোমানের কনটেন্ট লাগবে, ভিজিটর আরও বেশি লাগবে, আরও বেশি পেইজভিউ লাগবে। আশা ছাড়লাম না। আবারও শুরু করলাম। ঘুরে-ফিরে আবারও SEO-তে যাওয়া লাগল।

অ্যাডসেন্স নামক সোনার হরিণটা পেয়েই গেলাম

দেখতে দেখতে এক বছর পার হয়ে গেলো। আমার ভিজিটরও বাড়তে থাকল। আমিও ওয়েব ডিজাইনিং শিখে গেছি। জুমলার ওপর মোটামুটি হাফেজ হয়ে গেছি। এবার আমার নিজের মনমানসিকতারও পরিবর্তন করলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, টাকা ইনকাম করতে পারি বা না পারি প্রতিদিনই আমি আমার সাইটে নতুন নতুন বই আপলোড করব (তাই বলে ভাববেন না যে, আমি অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করা ছেড়ে দিয়েছি)। সঠিকভাবে পোস্ট করি, সঠিকভাবে SEO করি, নিয়মিত ভিজিটরদের চাহিদার প্রতি খেয়াল রাখি। আমার তখন দৈনিক সাইট ভিজিট হয় ১২০০ বারের ওপর। অ্যাডসেন্স পাই আর না পাই, নিজেকে সার্থক মনে হতে লাগল। কে জানত, এরই মধ্যে আমি আরও এক জায়গায় সফল হয়ে যাচ্ছি। হ্যাঁ, আমি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পেয়ে গেছি। এবার আমাকে কে আটকায়?
অ্যাকাউন্ট তো পেয়েছি কিন্তু অ্যাডের কোড বসাব কোথায়? আবারও ত্রাণকর্তা সুমন ভাই। তিনি আমাকে মাসুদুর রশিদ ভাইয়ের লেখার লিংক দিলেন। তাঁর একটা লেখা থেকে জানতে পারলাম, কোথায় কোথায় অ্যাডের কোড বসাতে হবে, কীভাবে বসাতে হবে? একটা পেইজে সর্বোচ্চ কয়টা অ্যাডের কোড বসাতে পারব, কয়টা টেক্সট/ইমেজ/ব্যানার অ্যাড বসাতে পারব, ইত্যাদি। তার লেখা অনুসরণ করে সব অ্যাড বসালাম। এবার আসবে শুধু টাকা আর টাকা, টাকা আর টাকা!
হায় রে আমার ইনকাম! হায় রে আমার টাকা আর টাকা! আমি কি তখন জানতাম, রাস্তা আরও অনেক দূর!
এরই মধ্যে সুমন ভাইয়ের সেই বিখ্যাত লেখা ‘গুগল অ্যাডসেন্সধারীরা সাবধান হোন। অ্যাডসেন্স ব্যান এড়াতে লেখাটিতে বিশেষ দৃষ্টি দিন।’ বলেন তো দেখি, অ্যাডসেন্স পাওয়ার সাথে সাথে যদি কেউ এমন হুমকি দেয় তখন মেজাজটা কেমন হয়? ভাগ্য ভালো, সেদিন উনার লেখাটা আমার নজরে পড়েছিল। নয়তো কবেই আমার অ্যাকাউন্ট পটল তুলত!

মাস শেষ কিন্তু ইনকাম মাত্র ১৬ সেন্ট!

এক মাস হয়ে গেল। আমার ইনকাম হল মাত্র ১৬ সেন্ট! অ্যাডে ক্লিক পড়ে অনেক কম। অথচ প্রতিদিন সাইট ভিজিট হয় ১২০০ বারেরও বেশি। বিশ্বাস করা যায়! এত দিনে আমি মাসুদুর রশিদ ভাইকে চিনে ফেলেছি। তাই তাঁর শরণাপন্ন হলাম। তিনি আমাকে বললেন, তুমি SEO করার সময় যেসব Keyword ব্যবহার করেছ সেগুলোর ক্লিকের দাম কম, তাই তোমার ইনকামও কম।
এবার আবার শুরু হলো কিওয়ার্ড রিসার্চ। এক মাস পর আমার অ্যাকাউন্টে দেখি ১১৩ ডলার ৮০ সেন্ট! হয়তো অনেক কম কিন্তু অ্যাকাউন্ট পাওয়ার ২ মাস পর ১১৩ ডলার আমার মতো ছেলের জন্য অনেক ছিল। অবশেষে গুগল আমার চেক ইস্যু করল। পাঠিয়ে দিল আমার অনেক কষ্টার্জিত ১১৩ ডলার ৮০ সেন্ট আমার বাসার ঠিকানায়।

সময় এবার অপেক্ষার কখন আসবে সেই চেক?

চেক আর আসে না। সময়ও যেন কাটে না। কেন জানি না, এই সময়টায় আমি ‘সময় যেন কাটে না’ গানটা একটু বেশি শুনছি। সুমন ভাইকে ফোন দিই আর বলি, ভাই আমার চেক তো এল না। সুমন ভাই বলে অপেক্ষা করো, চলে আসবে। শাকিল আরেফিন ভাইকেও ফোন দিই আর বলি, ভাই আমার চেক তো এল না। তিনিও বলেন, অপেক্ষা করো, চলে আসবে। একইভাবে ফোন দিই মাহবুব ভাইকেও। সবাই একই কথা বলে, অপেক্ষা করো, চলে আসবে। আমিও তখন মনকে বোঝাই, অপেক্ষা করো, চলে আসবে!

অবশেষে এল সেই স্বপ্নের চেক!

২৭ দিন পর অফিসে এসে ডাকপিয়ন আমাকে গুগল অ্যাডসেন্সের চেক দিয়ে যায়। মনে যে কী খুশি লেগেছিল বোঝাতে পারব না। ঠিক এখন আপনাদের কাছে যেমন লাগছে, আমার কাছে তার চেয়েও অনেক বেশি লেগেছিল। সাথে সাথে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম। সুমন ভাইকে জানালাম, মাহবুব ভাইকে জানালাম, শাকিল আরেফিন ভাইকে জানালাম, সাব্বির ভাইকে জানালাম, মাসুদ ভাইকেও জানালাম। টেকটিউনস-এর সবাইকে জানালাম। অন্য রকম একটা দিন উদ্যাপন করলাম। আর স্বপ্ন দেখতে লাগলাম প্রতি মাসে একটা করে গুগলের চেক পাব।
কে জানত, কয় দিন পর আমার ওপর দিয়ে কী একটা ঝড়ই না যাবে!

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’ মরতে মরতে বেঁচে গেছি

তখন আমার দৈনিক দুই ডলারের মতো ইনকাম হতো। হঠাৎ একদিন মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চেপে বসল। কী জানেন? IP Hide করে নিজের অ্যাডে নিজেই ক্লিক করার সিদ্ধান্ত নিলাম। যেই ভাবা, সেই কাজ। দিলাম আমার আইপি হাইড করে American আইপি বানিয়ে। আর সাইটে গিয়ে দিলাম ৩-৪টা ক্লিক! ৩-৪ ঘণ্টা পর দেখি আমার অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ২২ ডলার। মাথা নষ্ট! এখন থেকে দৈনিক আইপি হাইড করে ক্লিক দেব। হঠাৎ সন্দেহ হলো, আমার আইপি কি গুগল ধরতে পারবে? দিলাম গুগলে সার্চ ‘What is my real IP?’ ওমা! আমার তো দেখি আসল আইপিই শো করছে! সাথে সাথে দিলাম সুমন ভাইকে ফোন। ভাই, এখন আমি কী করব? তিনি প্রথমে ছোট ভাইয়ের মতো ইচ্ছামতো শাসালেন। তারপর বললেন পেইজভিউ কত? বললাম ৩০০০-এর বেশি। তিনি বললেন, যা করেছো তা তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না, তবে জীবনেও আর এই কাজ করো না। আমি বললাম, আচ্ছা। বিশ্বাস করুন, আমি আর জীবনেও এই কাজ করিনি, আর কোনো দিন করবও না। শেষে দেখা যাবে, আমও যাবে, ছালাও যাবে। তাই এসব বাদ দিয়ে ঠিক পথে ইনকাম শুরু করলাম। আর সবাইকে জানাতে লাগলাম যে আমার সাইটে প্রচুর পরিমাণে বই পাওয়া যায়। এসব করে ভিজিটর বাড়াতে লাগলাম।
কে জানত, আমি ঠিক পথে থাকলেও কিছু কিছু মানুষ ইতিমধ্যেই আমার ক্ষতি করা শুরু করে দিয়েছে!

লিংক শেয়ার করে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম!

একটি ব্লগে গিয়ে একদিন দেখি একজন হূমায়ূন আহমেদের বই খুঁজছে। বেচারার প্রতি সদয় হয়ে আমি আমার ওয়েবসাইটের লিংকটা সেখানে শেয়ার করলাম (নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলাম)। ঘণ্টাখানেক পর আমার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে গিয়ে দেখি ক্লিক পড়েছে ১৩০টা! ইনকাম হয়েছে ৪৫ ডলার! কি? খুব খুশি লাগছে শুনে তাই না? কিন্তু না? আমার কপাল ভালো যে আমি সেদিন এত ইনকাম দেখে খুশি হতে পারিনি। যদি খুশি হতাম তাহলে আমার এই লেখাও হতো না, অ্যাকাউন্টও আর থাকত না। কিছু বুঝতে পারছি না কী করব? উপায় না দেখে সাইটই অফলাইনে নিয়ে গেলাম। এখন আবার চিন্তা, সাইট যদি ভিজিট না হয় তাহলে তো পেইজভিউ বাড়বে না। পেইজ CTR ১৫ এর উপরে। যেখানে ১০ হলেই বিনা নোটিশে অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেয় সেখানে ১৫। ভাবা যায়! আবার ফোন দিলাম সুমন ভাইকে (যেখানেই বিপদ সেখানেই সুমন ভাই। আমার বিশ্বাস হয় না, একটা মানুষ এত হেল্পফুল হয় কীভাবে, তাও আবার নিঃস্বার্থভাবে)। তিনি আমাকে বললেন, তোমার অ্যাডের কোডগুলো আপাতত ব্লক করে দাও। তাহলে পেইজভিউ বাড়বে কিন্তু কোনো ক্লিক পড়লে গুগল কাউন্ট করবে না। উনার কথামতো অ্যাড ব্লক করে দিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি আমার পেইজ CTR কমা শুরু করেছে। আর সেই ৪৫ ডলার মাইনাস হয়ে আমার আগের ইনকাম ৩ ডলার দেখাচ্ছে। শালা কত্ত খারাপ! ৪৫ ডলার যখন দিলি তখন আবার মাইনাস করলি কেন?

 এখন আমার কী অবস্থা?

আমার বর্তমান অবস্থা জানতে বেশি কিছু লাগবে না। শুধু আমার আজকের ইনকামের স্ক্রিনশটটা দেখুন
Google Adsense
ছবিটি গত ১৫/০১/২০১৪ তারিখে তোলা
সবশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই তাহের চৌধুরী সুমন ভাই, মাসুদুর রশিদ ভাই ও ডেভসটিমের কাছে। যাঁদের সহযোগিতা না পেলে আজ আমি এত দূর আসতে পারতাম না। আমি সব জায়গায়, সব সময় সুমন ভাইয়ের কথা স্মরণ করি। সুমন ভাই, আপনি শুধু আমাকে পথই দেখাননি, আমার জীবনটাও বদলে দিয়েছেন। আই স্যালুট ইউ, ম্যান!
রাশেদ হাসান আকাশ
অ্যাডসেন্স পাবলিশার

No comments:

Post a Comment