Friday, December 23, 2016

পুরনো টুথব্রাশ ফেলবেন না!‌

টুথব্রাশ পুরনো হলেও ফেলবেন না। ওই দিয়ে হাসিল হবে অনেক কাজ।❏‌ জুতোয় কাদা লাগলে পুরনো কাজে লাগান পুরনো টুথব্রাশ। এই দিয়ে ঝেড়ে ফেলুন ময়লা। জুতো হবে আগের মতোই।

❏‌ কম্পিউটারের কিবোর্ডের ফাঁকে জমে থাকা ধুলোও কিন্তু অনায়াসে এই টুথব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে ফেলতে পারেন।
❏‌ জামা–কাপড়ে খাবারের দাগ ওঠানো মুশকিল। বেশিক্ষণ সাবানে ভিজিয়ে রাখলে রং উঠে যায়। তাই দাগের জায়গায় সাবান লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে ঘষুন। দাগ উঠে যাবে।
❏‌ স্টিলের কলে জলের দাগ ধরে যায়। হাত দিয়ে ঘষলেও লাভ হয় না। কাজে লাগান টুথ ব্রাশ। কলে ভিনিগান লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলুন।
❏‌ রুপো বা সোনার সূক্ষ্ম গয়নার ফাঁকে ময়লা জমে। কাপড় দিয়ে ঘষে সেগুলো তোলা সম্ভব নয়। ব্রাশে শ্যাম্পু লাগিয়ে হালকা হাতে ঘষুন। ময়লা উঠে যাবে।
❏‌ শীতকাল এলেই গোড়ানি ফাটে। গরম জলে পা ডুবিয়ে রাখুন। তার পর টুথ ব্রাশ দিয়ে ঘষে গোড়ালির মরা চামড়া তুলুন। এর পর ক্রিম লাগাতে ভুলবেন না।
❏‌ চিরুনির ফাঁকে ময়লা তোলার জন্যও দারুণ কাজে আসবে টুথ ব্রাশ। সাবান জলে চিরুনি ভিজিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। তার পর ব্রাশ দিয়ে ঘষে ময়লা বের করুন।
❏‌ রান্নাঘরে টাইলসের ফাঁকে ময়লা জমে। সেগুলও টুথব্রাশ দিয়ে অনায়াসে সাফ করা যাবে।
- See more at: http://www.bd24live.com/bn/article/113916/index.html#sthash.6LVHxa3q.dpuf

Monday, December 19, 2016

ফ্রিজ পরিষ্কার রাখবার উপায়


সঠিকভাবে যত্ন করলে অনেকদিন ফ্রিজ নতুনের মতো রাখা সম্ভব।
জীবনযাপন বিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে হাতের কাছে পাওয়া যায় এমন উপাদান দিয়ে ফ্রিজ ভালোভাবে পরিষ্কার রাখার কিছু পন্থা এখানে দেওয়া হল।

পুরানো থেকে নতুন দেখাতে: ফ্রিজের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলভাব ফিরিয়ে আনতে মসলিন কাপড়ে জলপাইয়ের তেল অথবা বেবি তেল লাগিয়ে বাইরের অংশ ঘষে নিতে হবে। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করার পর হালকাভাবে তা মুছে ফেলতে হবে।

দুর্গন্ধ: প্রতি সপ্তাহে একবার ফ্রিজের ভেতরে বেইকিং সোডা ও স্পঞ্জ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।

সুগন্ধ: একটি তুলার বল ভ্যানিলা এসেন্সে ভিজিয়ে ফ্রিজের ভেতরে রেখে দিলে সুগন্ধি হিসেবে কাজ করে।

নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করতে: এক লিটার গরম পানিতে পাঁচ টেবিল-চামচ লবণ মিশিয়ে একটি দ্রবণ তৈরি করুন এবং এটি দিয়ে ফ্রিজের ভেতরে পরিষ্কার করুন।

ফল বা সবজি পচে গেলে: খাবার পঁচে গেলে ফ্রিজে পঁচা গন্ধের সৃষ্টি হয়। ফ্রিজের ভেতরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য টমেটোর রস ব্যবহার করুন, পরে গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।

দাগ বা ছোপ পড়লে: ফ্রিজের ভেতরে বা বাইরে যেখানেই দাগ ছোপ পড়ুক না কেনো ক্লাব সোডার মধ্যে কাপড় ভিজিয়ে তা মুছে ফেলুন।

প্রতিরক্ষামূলক স্তর: কাচ বা প্লাস্টিক থেকে দাগ বা ছোপ থেকে রক্ষা করতে পুরানো টেবিল ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন, এটি ফ্রিজ পরিষ্কারকে আরও সহজ করে তোলে। বর্তমানে বাজারে রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার রাখার ম্যাটও পাওয়া যায় ।  

সতেজ রাখা: ফল ও সবজি নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে ও সতেজ রাখতে বাবল র‍্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।

ছত্রাক থেকে মুক্তি: সমপরিমাণ পানি ও ভিনিগার মিশিয়ে তা দিয়ে রেফ্রিজারেটরের ভেতরে কোনাগুলো পরিষ্কার করতে হবে।

ফ্রিজের নিচে পরিষ্কার করা: পুরানো কাপড় থেকে খানিকটা অংশ কেটে নিয়ে তা হ্যাঙারের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। পরে এটি খুব সহজেই মপ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

Tuesday, September 27, 2016

ডেইরী এবং ফ্যাটেনিং নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর



প্রশ্ন ০১: আমি বিদেশে থাকি। কিছু টাকা জমিয়েছি, দেশে এসে ফার্ম করতে চাই। ফার্ম করে কি সংসার খরচ চালাতে পারবো?
উত্তর: ধরে নিলাম আপনি ৩০ লাখ টাকা জমিয়েছেন। প্রথেমেই বলবো, না আপনি পারবেন না সংসার খরচ চালাতে। কারন আমি চাইনা আপনি এই টাকার পুরোটা এই খাতে বিনিয়োগ করেন এখন। দেশে আসার আগেই আপনি ছোট করে ৫ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। দেশে আপনার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি কেউ থাকে তারা দেখাশুনা করবে। এই ক্ষেত্রে খুব কম খরচে একটা গোয়াল ঘর সাথে ২ টা ১২-১৪ লিটার দুধের গরু বাছুর সহ এবং ৩-৪ টা ছোট দেশী ষাড় বাছুর কিনতে পারেন। ঘাস চাষ অবশ্যই করতে হবে খরচ কমিয়ে আনার জন্য। দুধের গরুগুলো ৭-৮ মাস দুধ দেবে, এটা দিয়ে সব গরুর খাবার খরচ, এবং ১ জন কর্মচারীর বেতন হয়ে গিয়ে যা থাকবে তা জমিয়ে রাখবেন। ডেইরী ব্যবসা লাভবান তখনই হবে যদি আপনার গরুগুলো প্রতি বছর বাচ্চা দেয় এবং খরচ কমিয়ে আনতে পারেন। এটাই মূল মন্ত্র। আপনার গরু ২ টি দুধ দেয়া বন্ধ করে দিলে ৪-৫ মাস ড্রাই সময়টা জমানো টাকা খরচ করবেন বা ১-২ টা ষাড় বিক্রি করে দিলেন, পাশাপাশি দানাদার খাবার কমিয়ে ঘাস খর খাইয়ে খরচ কমানোর চেস্টা করবেন।এই সময়টা চালিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই কঠিন। ৪-৫ মাস পরে আবার বাচ্চা দিলে আবার দুধ বিক্রি করে আগের অবস্থায় চলে আসতে পারবেন।
এই ক্ষেত্রে ষাড় বাছুর গুলো না কিনে আপনি শুধু মাত্র ২ টা দুধের গরু দিয়েও শুরু করতে পারেন। এগুলোর দুধ দেয়া বন্ধ হয়ে গেলে আবার ২ টা কিনবেন। এভাবে একটা সাইকেল করে নিলে দুধের টাকা দিয়েই খাবার খরচ মিটিয়ে হয়তো কিছু টাকা হাতে থাকতে পারে। দুধের দাম কত, কোথায় কিভাবে বিক্রি করবেন তা আগে থেকে জেনে বুঝে ডেইরী শুরু করবেন।
এভাবে কমপক্ষে ৩-৪ বছর যাবার পর একটা ভাল অবস্থানে যখন চলে আসবে, তখনই আপনি দেশে চলে আসতে পারবেন।পয়সা যেহেতু খরচ করে গিয়েছেনই, টাকাটা তো তুলতে হবে। এই ব্যবসা না বুঝে আগেই দেশে চলে আসবেন না প্লিজ। তবে যে টাকা খরচ করে মানুষ বিদেশ যায়, সেই টাকা দিয়ে দেশে অনেক বেশী ভালো কিছু করা যেতো।
প্রশ্ন ০২: আমি কি ডেইরী শুরু করবো নাকি ফ্যাটেনিং?
উত্তর: কোনটা শুরু করবেন তা নির্ভর করবে আপনার আর্থিক, পারিপার্শ্বিক এবং অবস্থানগত সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে। আপনার এরিয়াতে যদি দুধের দাম ভালো থাকে, আপনি যদি ভালো দুধের গরু জোগাড় করতে পারেন, ডাক্তার বা পশু হাসপাতাল কাছেই থাকে আপনি ডেইরী করতে পারেন। তবে ফার্ম শুরু করা যতনা কঠিন তার থেকে বেশী কঠিন এর ব্যবস্থাপনা কৌশল। ফ্যটেনিং এর ক্ষেত্রে যদি শুধু কোরবানীকে লক্ষ্য রেখে আগান তাহলেও ঝুঁকি আছে। কারন কোরাবানীর বাজার নিয়ন্ত্রন করে ভারতের গরুর যোগান। আপনি আমি এই ঈদের বাজারে গরুর দাম কোনভাবেই নির্ধারন করতে পারবোনা। তাই যদি ১২ মাস ধরে বিক্রি চালিয়ে যেতে পারেন ফ্যাটেনিং এ ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
 প্রশ্ন ০৩: ডেইরী ফার্মের সফলতার মূল দিক কি কি?
উত্তর: ৪ টা দিক সব থেকে গুরুত্তপূর্ন: ১) গরুকে প্রতি বছর বাচ্চা দিতে হবে। ২) ফার্মের খাবার খরচ কমিয়ে আনতে হবে ৩) নিজের উপস্থিতি ৪) সঠিক ব্যবস্থাপনা
গরু যদি ৫ লিটার দুধও দেয়, কিন্তু প্রতি বছর বাচ্চা দেয় তাহলে ফার্ম লাভবান হবে। পাশাপাশি খরচের লাগাম কঠিনভাবে ধরে রাখতে হবে। এজন্য ঘাস চাষ করতে হবে, সাইলেজ করতে হবে। আর নিজের উপস্থিতি, এর কোন বিকল্প নেই।
 প্রশ্ন ০৪: গরু হিটে আসার পর কয়েকবার সিমেন বা বীজ দেয়া হয়েছে, বীজ রাখছেনা!! কি করা যায়?
উত্তর: হয়তো যে এ আই কর্মী সিমেন পুশ করছে তিনি এক্সপার্ট নয়, হয়তো যে সিমেন যে টেম্পারেচার এ রাখার কথা তা রাখা হয়নি, নস্ট হয়ে গেছে, অথবা আপনি সঠিক তথ্য দিতে পারেননি এ আই কর্মীকে। এই রকম নানাবিধ সমস্যায় পড়ে এভাবে বার বার সময় নস্ট না করে ভাল জাতের ষাড় দিয়ে পাল দিতে হবে। ফার্মে একটা ভালো জাতের ফ্রিজিয়ান বা শাহীওয়াল ষাড় রাখা এজন্যই খুব জরুরী। গরু প্রতি বছর বাচ্চা না দিলে ফার্ম লোকসান হবেই। অত্যন্ত জরুরী এটা।
প্রশ্ন ০৫: ডেইরী এবং ফ্যাটেনিং এর জন্য কোন জাতের গরু ভালো হবে?
উত্তর: ডেইরীর জন্য আমি ফ্রিজিয়ান জাতকে পছন্দ করি। আমাদের দেশে এই জাতটার রেকর্ড ভালো, যদিও ইনব্রিড হতে হতে প্রায় ধংসের পথে। এই মন্দের মধ্যে এটাই ভালো। ফ্যাটেনিং এর জন্য ফ্রিজিয়ান(F), শাহীওয়াল (S) অথবা এই ২ টার ক্রস SxF থেকে যে ষাড় বাচ্চাটা আসে এটাও অসাধারন। আমার মতে SxF এর ষাড়, আমেরিকান ব্রাহমা থেকে কোন অংশে কম নয়। আর এই ক্রস থেকে যে বকনা বা মেয়ে বাচ্চা হবে তাও দুধের জন্য খারাপ হবেনা। এছাড়া আমাদের দেশের নিজস্ব জাত পাবনা ব্রিড এবং রেড চিটাগং ও বেশ ভালো।
প্রশ্ন ০৬: আমার এলাকায় ঘাস নাই। কি করে খরচ কমাবো?
উত্তর: যাদের এলাকায় ঘাস নেই তারা হাইড্রোফনিক করতে পারেন। নেটে অনেক ভিডিও আছে, অনেকের লেখা আছে ফেসবুকে কিভাবে করতে হয় শিখে নেবেন। খুব সহজ। আর যাদের ৩- ৬ মাস পানি থাকে জমিতে এজন্য ঘাস করতে পারেন না তারা সাইলেজ করতে পারেন এই খারাপ সময়কে ব্যাক আপ দেবার জন্য। সাইলেজ কি করে করবেন আমার ফেসবুকে লেখা আছে। আগে অল্প করে দেখেন কেমন হয়।
প্রশ্ন ০৭: দেশী গরুকে বিদেশী সিমেন দিলে কি ভালো ফল পাওয়া যাবে?
উত্তর: দেশী গরুকে ৫০-৭৫% এর সিমেন দিতে পারেন। এতে খুব ভালো বাচ্চা আসবে, দুধ ও অনেক ভালো আসবে। এরপর যে বাচ্চা আসবে ওটাকে আবার ৭৫% সিমেন দিবেন। এভাবে জাত উন্নয়ন করে নিলে আপনি সব থেকে ভালো দুধের গরু পাবেন। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের দেশী গরু কি এখন পাওয়া যায়!!! এটা সংরক্ষন করাই এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
প্রশ্ন ০৮: আমি চাকুরী করছি ঢাকায়। আমার অনেকদিনের শখ একটা ফার্ম করার। আমি কিভাবে আগাবো?
উত্তর: যদি নিজের কাছের লোক থাকে যারা আপনাকে ঠকাবেনা, মিথ্যা বলবেনা তাহলে শুরু করতে পারেন ছোট পরিসরে নিজের বাড়ীতে। এখান থেকে আয় করে আপনি চলবেন এভাবে চিন্তা না করাই ভালো প্রথম অবস্থায়। ধরেই নেবেন ৩ বছর কিছু আসবেনা। শুধু সম্পদ বাড়বে। কৌশলগত ভাবে আগালে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে এখনই কিছু মুনাফা আসবে (প্রশ্ন ০১ দেখেন)। আর মোটামুটি ৩৪-৪০ লাখ টাকা হাতে নিয়ে নামলে প্রথম থেকেই বেশ ভাল লাভ বা মুনাফা করতে পারবেন। সবকিছু কৌশলগত ব্যাপার। সকল সমস্যা ছোট ব্যবসায়ীদের যাদের মুলধন কম, তাই অপেক্ষা তাদের একটু বেশী করতে হবে।
প্রশ্ন ০৯: ভালো দুধের গরু কোথায় পাবো? সবাই ঠকায়, বলে একটা দুধ হয় আরেকটা। কি করে ভালো দুধের গরু চিনতে পারবো?
উত্তর: হ্যা, অনেকেই মিথ্যা বলে ঠকিয়ে দিচ্ছে। আমার পরামর্শ, গরু না চিনলে গাভীন গরু প্রথম অবস্থায় কিনবেন না। নানা ভাবে আপনাকে বিক্রেতা বুঝাবে। আপনি তখনই কিনবেন যখন গরু দেখলেই বুঝে যাবেন কেমন হতে পারে। এই গাভীন গরু কেনা জুয়া খেলার মত অবস্থা। দুধের গরু কেনাতেও অনেক ধোকাবাজী আছে। দুধের গরু কেনার আগের দিন বিকাল বেলা দুধ দোয়ানোর সময় সামনে থেকে দেখবেন কতটুকু দুধ পেলেন। পরেরদিন সকাল বেলা যাবেন আবার দুধ দোয়াতে। এভাবে প্রথম বিকাল পরে সকাল….. ঠিক এই নিয়মে গিয়ে দুধ চেক করে দেখলে আপনাকে ঠকাতে পারবে না। আপনি যদি আগে সকালে এরপর বিকালে যান….. তাহলেই ধরা খাবেন। কি করে শুনুন। যেদিন সকালে যাবেন তা যদি আগের দিন বিক্রেতা জানে সে আগেরদিন বিকালে দুধ কম দোয়াবে আপনাকে পরেরদিন বেশী দুধ দেখানোর জন্য। আপনি তো সকাল বেলা গিয়ে দেখবেন দুধ পেয়েছি সকালেই ১৮ কেজি, বিকালে ৬ কেজি। এরপর আপনি ২.৫০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে আনবেন। বাসায় এসে দেখবেন সকালে হচ্ছে ১১ কেজি এবং বিকালে ৬ কেজি। মানে ঠকে গেছেন আপনি, প্রায় ৮০ হাজার টাকা বেশী দিয়ে গরু কিনে এনেছেন। আশাকরি বোঝাতে পেরেছি।

দেশি (ব্ল্যাক বেঙ্গল) ছাগল খামার

দেশি (ব্ল্যাক বেঙ্গল) ছাগল খামার স্থাপনে উন্নত গুলাগুরসম্পন্ন ছাগল নির্বাচন কৌশল
ভূমিকা: লাভজনক বৱ্যাক বেঙ্গল ছাগলের খামার স্থাপনে উৎপাদন বৈশিষ্ট্য উনড়বত গুনাগুনসম্পনড়ব ছাগী ও পাঁঠা সংগ্রহ একটি মূল দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত। মাঠ পর্যায়ে বিভিনড়ব বয়সী ছাগী ও পাঁঠা নির্বাচন সফলভাবে পালনের জন্য প্রযুক্তিগত তথ্যাদি সরবরাহ অত্যাবশ্যক।
প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য/সংক্ষিপ্ত বিবরণ
বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক ছাগল প্রজনন খামার না থাকায় মাঠ পর্যায় হতে ছাগল সংগ্রহ করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে ব্যাক বেঙ্গল ছাগল, বাচ্চা ও দুধ উৎপাদন ক্ষমতার ভিনড়বতা বিদ্যমান। উক্ত ভিনড়বতা বংশ অথবা/এবং পরিবেশগত কারণ বা স্বতন্ত্র উৎপাদন দক্ষতার জন্য হতে পারে। সে প্রেক্ষাপটে ব্যাক বেঙ্গল ছাগল খামার প্রতিষ্ঠার জন্য বংশ বিবরণের ভিত্তিতে বাছাই ও নিজস্ব উৎপাদন/পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলীর ভিত্তিতে বাছাই বিবেচনায় রেখে ছাগল নির্বাচন করা যেতে পারে।
বংশ বিবরণের ভিত্তিতে বাছাই
মাঠ পর্যায়ে বংশ বিবরণ পাওয়া দুরূহ। কারণ খামারীরা ছাগলের বংশ বিবরণ লিখিত আকারে সংরক্ষণ করেন না। তবে তাঁদেও সাথে আলোচনা করে একটি ছাগী বা পাঁঠার বংশের উৎপাদন ও পূনরুৎপাদন দক্ষতা সম্বন্ধে ধারনা নেয়া যেতে পারে। ছাগীর মা/দাদী/নানীর প্রতিবারে বাচ্চার সংখ্যা, দৈনিক দুধ উৎপাদন, বয়োপ্রাপ্তির বয়স, বাচ্চার জন্মের ওজন ইত্যাদি সংগ্রহ করা সম্ভব। পাঁঠা নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাঁঠার মা/দাদী/নানীর তথ্যাবলীর উপর নির্ভর করা যেতে পারে। একটি উনড়বত বৱ্যাক বেঙ্গল ছাগী/পাঁঠার বংশীয় গুনাগুন নিমড়বরূপ হওয়া প্রয়োজন
নিজস্ব উৎপাদন/পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলীর ভিত্তিতে বাছাই
এ ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন। ছাগী ও পাঁঠার উৎপাদন এবং পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলী এবং এদের দৈহিক
বৈশিষ্ট্যাবলী। পাঁঠা নির্বাচনের ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলী তার
মা/দাদী/নানীর গুনাগুনের উপর নির্ভর করবে। তবে পাঁঠার দৈহিক বৈশিষ্ট্যাবলীর বিবেচনায় নির্বাচন করা যেতে পারে। ছাগী নির্বাচনে উৎপাদন ও পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলী নিমড়বরূপ হবে।
সারণী ১ঃ ছাগীর উৎপাদন/ পূনরুৎপাদন বৈশিষ্ট্যাবলী
উৎপাদন ও পূনরুৎপাদন গুনাগুন
ঘন ঘন বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা ঃ বছরে কমপক্ষে ২ বার এবং প্রতিবার কমপক্ষে ২টি বাচ্চা
ন্যূনতম দৈনিক দুধ উৎপাদন ঃ ৬০০ মি.লি
প্রতিটি বাচ্চার জন্ম ওজন ঃ >১ কেজি
বয়োঃপ্রাপ্তির বয়স ঃ ৪.৫ - ৫ মাস
বয়োঃপ্রাপ্তির ওজন ঃ >১০ কেজি
দুগ্ধ প্রদানকাল ঃ ৩ মাস
ছাগী নির্বাচন
লাভজনক বৱ্যাক বেঙ্গল ছাগল খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সারণী-১ এ উলেখিত জাতের ছাগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক যে সমস-
গুনাবলী বিবেচনা প্রয়োজন তা নিমড়বরূপ। বিভিনড়ব বয়সে দৈহিক বৈশিষ্ট্যের তারতম্য হয়। সে কারণে একটি ছাগীর ৬-১২ মাস, ১২-২৪ মাস এবং ২৪ মাসের উর্দ্ধে বয়সের দৈহিক বৈশিষ্ট্যাবলী ভিনড়বভাবে তুলে ধরা হল।
উনড়বত গুনাগুন সম্বলিত একটি ছাগীর নিমড়বলিখিত বৈশিষ্ট্যাবলী থাকা প্রয়োজন
মাথা ঃ চওড়া ও ছোট হবে
দৈহিক গঠন ঃ শরীর কৌনিক এবং অপ্রয়োজনীয় পেশীমুক্ত হবে
বুক ও পেট ঃ বুকের ও পেটের বেড় গভীর হবে
পাজরের হাড় ঃ পাজরের হাড় চওড়া এবং দুইটি হাড়ের মাঝখানে কমপক্ষে এক আঙ্গুল ফাঁকা জায়গা থাকবে
ওলান ঃ ওলানের দৈর্ঘ্য এবং প্রস' সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে। বাঁটগুলো হবে আঙ্গুলের মত একই আকারের এবং
সমান-রালভাবে সাজানো। দুধের শিরা উলেৱখযোগ্যভাবে দেখা যাবে
বাহ্যিক অবয়ব ঃ আকর্ষণীয় চেহারা, ছাগী সুলভ আকৃতি, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নিখুঁত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
পাঁঠা নির্বাচন
লাভজনক বৱ্যাক বেঙ্গল ছাগল খামার প্রতিষ্ঠার জন্য উলেৱখিত জাতের পাঁঠা নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৈহিক যে সমস- গুনাবলী বিবেচনাপ্রয়োজন তা নিমড়বরূপ। বিভিনড়ব বয়সে দৈহিক বৈশিষ্ট্যের তারতম্য হয়।
উনড়বত গুনাগুন সম্বলিত একটি পাঁঠার নিমড়বলিখিত বৈশিষ্ট্যাবলী থাকা প্রয়োজন
চোখ : পরিষ্কার, বড় ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পনড়ব হবে
ঘাড় : খাটো ও মোটা থাকবে
বুক : গভীর ও প্রশস- হবে
পিঠ : প্রশস- হবে
লয়েন : প্রশস- ও পুরু এবং রাম্প এর উপরিভাগ সমতল ও লম্বা থাকবে
পা : সোজা, খাটো এবং মোটা হবে। বিশেষ করে পিছনের পাদ্বয় সুঠাম ও শক্তিশালী হবে এবং একটি হতে অন্যটি বেশ
পৃক থাকবে
অন্ডকোষ : শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঝুলানো থাকবে
বয়স : অধিক বয়স্ক (২ বছর বয়সের বেশী) পাঁঠা নির্বাচন করা যাবে না
ব্যবহারের সম্ভাবনা
সব ঋতুতে এবং সমগ্র বাংলাদেশে ব্যবহার উপযোগী।
প্রযুক্তি ব্যবহারের সতকর্তা/বিশেষ পরামর্শ
শুধুমাত্র উপরোলেখিত বৈশিষ্ট্যাবলীর উপর ভিত্তি করে ছাগী এবং পাঁঠা নির্বাচন করলে একটি খামার লাভবান হবে না। বরং
উনড়বত ছাগল নির্বাচনসহ খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু খামার ব্যবস্থাপনা করা হলে লাভজনক খামার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
সূত্র : কৃষি তথ্য সার্ভিস

ষ্টল ফিডিং পদ্ধতিতে ছাগল পালন এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা

বাংলাদেশে ছাগল পালনের ক্ষেত্রে সাধারণত ছাগলকে ছেড়ে বা মাঠে বেঁধে খাওয়ানো হয়। গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত বিজ্ঞানভিত্তিক বাসস্থান, খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছাগল পালনের প্যাকেজ প্রযুক্তিকে স্টল ফিডিং পদ্ধতি বলা হয়।
স্টল ফিডিং পদ্ধতির করণীয়ঃ
ছাগল নির্বাচনঃ এ পদ্ধতিতে ছাগল খামার করার উদ্দেশ্যে ৬-১৫ মাস বয়সী স্বাভাবিক ও রোগমুক্ত ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের পাঁঠা/ছাগী সংগ্রহ করতে হবে। পাঁঠার বয়স ৫-৭ মাস হতে পারে।
ছাগলের ঘরঃ স্টল ফিডিং পদ্ধতিতে প্রতিটি বয়স্ক ছাগলের জন্য প্রায় ১০ বর্গফুট ঘরের জায়গা প্রয়োজন। ঘরটি বাঁশ, কাঠ বা ইটের তৈরী হতে পারে। শীতের রাতে ঘরের বেড়া চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং মেঝেতে খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
ছাগলকে ঘরে থাকতে অভ্যস্ত করানোঃ ছাগল সংগ্রহের সাথে সাথেই সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় রাখা উচিত নয়। প্রথমে ছাগলকে দিনে ৬-৮ ঘন্টা চরিয়ে বাকী সময় আবদ্ধ অবস্থায় রেখে পর্যাপ্ত খাদ্য (ঘাস ও দানাদার খাদ্য) সরবরাহ করতে হবে। এভাবে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে চরানোর সময় পর্যায়ক্রমে কমিয়ে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় রাখতে হবে। তবে বাচ্চা বয়স থেকে আবদ্ধ অবস্থায় রাখলে এ ধরনের অভ্যস্ততার প্রয়োজন নেই।
বাচ্চার পরিচর্যাঃ জন্মের পরপরই বাচ্চাকে পরিষ্কার করে শাল দুধ খাওয়াতে হবে। এক মাস পর্যন্ত বাচ্চাকে দিনে ১০-১২ বার দুধ খাওয়াতে হবে। বাচ্চার চাহিদার তুলনায় কম দুধ থাকলে প্রয়োজনে অন্য ছাগী থেকে দুধ খাওয়াতে হবে। তাছাড়া দুধ না পাওয়া গেলে বাচ্চাকে মিল্ক রিপেৱসার খাওয়াতে হবে। দুধ খাওয়ানোর আগে ফিডার, নিপলসহ আনুসাংগিক জিনিসপত্র পানিতে ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। ১-১.৫ কেজি ওজনের একটি ছাগল ছানার দৈনিক ২৫০-৩৫০ গ্রাম দুধ প্রয়োজন। ওজন বৃদ্ধিও সাথে সাথে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। বাচ্চার বয়স ৬০-৯০ দিন হলে দুধ ছেড়ে দেবে। সাধারণত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগীকে প্রয়োজনমত খাওয়ালে বাচ্চার প্রয়োজনীয় দুধ পাওয়া যায়। বাচ্চার ১ মাস বয়স থেকেই ধীরে ধীরে কাঁচা ঘাস এবং দানাদার খাদ্যে অভ্যস্ত করতে হবে।
স্টল ফিডিং পদ্ধতিতে ছাগলকে খাওয়ানোঃ ছাগল সাধারণতঃ তার ওজনের ৪-৫% হারে খেয়ে থাকে। এর মধ্যে ৬০-৮০% আঁশ জাতীয় খাবার (ঘাস, লতা, পাতা, খড় ইত্যাদি) এবং ২০-৪০% দানাদার খাবার (কুড়া, ভূষি, চাল, ডাল ইত্যাদি) দিতে হবে। একটি বাড়ন্ত- খাসীকে দৈনিক ১-১.৫ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ২০০-২৫০ গ্রাম দানাদার খাবার (সারণী-১) দিতে হবে। দুই থেকে তিন বাচ্চা বিশিষ্ট ২৫ কেজি ওজনের ছাগীর দৈনিক প্রায় ১.৫-২.৫ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ৩৫০-৪৫০ গ্রাম দানাদার খাদ্য প্রয়োজন হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক পাঁঠার দৈনিক ১.৫-২.৫ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ২০০-৩০০ গ্রাম দানাদার খাদ্য প্রয়োজন।
সারণী-১: ছাগলের দানাদার খাদ্যের সাধারণ মিশ্রন (%)
খাদ্য উপাদান শতকরা হার (%)
চাল/গম/ভুট্টা ভাঙ্গা ১২.০০
গমের ভূষি/আটা/কুঁড়া ৪৭.০০
খেসারী/মাসকালাই/অন্য ডালের ভূষি ১৬.০০
সয়াবিন/তিল/নারিকেল/সরিষা/খৈল ২০.০০
শুটকি মাছের গুড়া ১.৫০
ডাই-ক্যালসিয়াম ফসফেট ২.০০
লবণ ১.০০
ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স ০.৫০
বিপাকীয় শক্তি (মেগাজুল/কেজি) ১০.০০
বিপাকীয় প্রোটিন (গ্রাম/কেজি) ৬২.০০
ছাগলের জন্য ঘাস চাষঃ ঘাস সরবরাহের জন্য বিভিন্ন জাতের দেশী ঘাস খাওয়ানো যায়। ইপিল ইপিল, কাঁঠাল পাতা, খেসারী, মাসকালাই, দুর্বা, বাকসা ইত্যাদি দেশী ঘাসগুলো বেশ পুষ্টিকর। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল নেপিয়ার, স্পেনডিডা, এন্ড্রোপোগন, পিকাটুলুম ইত্যাদি ঘাস আবাদ করা যেতে পারে।
ছাগলকে খড় খাওয়ানোঃ ঘাস না পাওয়া গেলে খড়কে ১.৫-২.০ ইঞ্চি (আঙুলের দুই কর) পরিমানে কেটে নিমেড়ব বর্ণিত পদ্ধতিতে পক্রিয়াজাত করে খাওয়ানো যেতে পারে। এজন্য ১ কেজি খড়ের সাথে ২০০ গ্রাম চিটাগুড়, ৩০ গ্রাম ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম পানির সাথে মিশিয়ে ইউএমএস তৈরী করে খাওয়ানো যেতে পারে। এর সাথে এ্যালজি উৎপাদন করে দৈনিক ১-১.৫ লিটার পরিমানে খাওয়াতে হবে। একটি ছাগল দৈনিক ১.০-২.০ লিটার পানি খায়। এজন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
পাঁঠার ব্যবস্থাপনাঃ যেসব পাঁঠা বাচ্চা প্রজনন কাজে ব্যবহার করা হবে না তাদেরকে জন্মের ২-৪ সপ্তাহের মধ্যে খাসী করানো উচিত। পাঁঠাকে যখন প্রজনন কাজে ব্যবহার করা হয় না তখন তাকে পর্যাপ্ত পরিমানে শুধু ঘাস খাওয়ালেই চলে। তবে প্রজনন কাজে ব্যবহারের সময় ওজন ভেদে ঘাসের সাথে ২০০-৫০০ গ্রাম পরিমান দানাদার খাবার দিতে হবে। পাঁঠাকে প্রজননক্ষম রাখার জন্য প্রতিদিন পাঁঠাকে ১০ গ্রাম পরিমাণ গাঁজানো ছোলা দেয়া উচিত। পাঁঠাকে কখনই চর্বিযুক্ত হতে দেয়া যাবে না।
ছাগলের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনাঃ সব ছাগলকে বছরে দু’বার (বর্ষার শুরু এবং শীতের শুরুতে) কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে। ছাগলের মারাত্মক রোগ, যেমনঃ পিপিআর, গোটপক্স হলে অতি দ্রুত নিকটস্থ পশুহাসপাতালে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া ছাগলে তড়কা, হেমোরেজিক সেপ্টিসেমিয়া, এন্টারোটক্সিমিয়া, বিভিনড়ব কারণে পাতলা পায়খানা এবং নিউমোনিয়া হতে পারে। সঠিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এ সকল রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সুস্থ ছাগলের জন্য একথাইমা রোগের ভ্যাকসিন জন্মের ৩য় দিন ১ম ডোজ এবং ২য় ডোজ জন্মের ১৫-২০ দিন পর দিতে হবে, পিপিআর রোগের ভ্যাকসিন ৪ মাস বয়সে এবং গোট পক্সের ভ্যাকসিন ৫ মাস বয়সে দিতে হবে।
জৈব নিরাপত্তাঃ খামারে কোন নতুন ছাগল আনতে হলে অবশ্যই রোগমুক্ত ছাগল সংগ্রহ করতে হবে এবং ১৫ দিন খামার থেকে দূরে অন্যত্র রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোন রোগ দেখা না দিলে ১৫ দিন পর পিপিআর ভ্যাকসিন দিয়ে ছাগল খামারে রাখা যাবে। অসুস্থ ছাগল পালের অন্য ছাগল থেকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।
ছাগলের প্রজনন ব্যবস্থাপনাঃ ছাগলের ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। সকল ছাগলকে বছরে ৫-৬ বার ০.৫% ম্যালাথায়ন দ্রবণে চুবিয়ে চর্মরোগ মুক্ত রাখতে হবে। পাঁঠী ১২-১৩ কেজি ওজন (৭-৮ মাস বয়স) হলে তাকে পাল দেয়া যেতে পারে। পাঁঠী বা ছাগী গরম হওয়ার ১২-১৪ ঘন্টা পর পাল দিতে হয়। অর্থাৎ সকালে গরম হলে বিকেলে এবং বিকেলে হলে পরদিন সকালে পাল দিতে হবে। পাল দেয়ার ১৪২-১৫৮ দিনের মধ্যে সাধারণত বাচ্চা দেয়। পাল দেয়ার জন্য নির্বাচিত পাঁঠা সবসময় নিঃরোগ, ভাল বংশের ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের হতে হবে। ‘‘ইনব্রিডিং’’ এড়ানোর জন্য ছাগীর বাবা বা দাদা বা ছেলে বা নাতীকে দিয়ে প্রজনন করানো যাবে না।
ছাগলের বাজারজাতকরণঃ সুষ্ঠু খাদ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় ১২-১৫ মাসের মধ্যে খাসি ২০-২২ কেজি ওজনের হয়। এসময় খাসী বিক্রি করা যেতে পারে। অথবা খাসির মাংস প্রক্রিয়াজাত করেও বিক্রি করা যেতে পারে।
তথ্য:
তথ্য আপা প্রকল্প

Wednesday, August 31, 2016

গরু মোটাতাজাকরন

বাংলাদেশে গরুর মাংস খুব জনপ্রিয় এবং চাহিদাও প্রচুর। তাছাড়া মুসলমাদের ধমীয় উৎসব কুরবানীর সময় অনেক গরু জবাই করা হয়। সূতরাং “ গরু মোটাতাজাকরন” পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন এবং একটি লাভজনক ব্যবসা।
গরু মোটাতাজাকরন প্রক্রিয়ায় ধারাবহিকভাবে যে সকল বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে হব তা নিম্নরুপ।
০১. পশু নির্বাচন, ০২. কৃমিমুক্তকরন ও টিকা প্রদান , ০৩. পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং ০৪. বাজারজাতকরন।
০১. পশু নির্বাচন : মোটাতাজাকরণ কর্মসূচীর জন্য গরু ক্রয়ের সময় প্রধান দুটি বিবেচ্য বিষয় হলো বয়স ও শারীরিক গঠন।
ক. বয়স নির্ধারন: মোটতাজা করার জন্য সাধারনত ২ থেকে ৫ বছরের গরু ক্রয় করা যেতে পারে, তবে ৩ বছরের গরু হলে ভাল।
খ.
শারীরিক গঠন : মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত গরুর দৈহিক গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মনে রেখে গরু নির্বাচন করা জরুরী।
• দেহ হবে বর্গাকার ।
• গায়ের চামড়া হবে ঢিলা ( দুই আঙ্গুল দিয়ে ধরে টান দিয়ে দেখতে হবে)। 
• শরীরের হাড়গুলো আনুপাতিকহারে মোটা, মাথাটা চওড়া, ঘাড় চওড়া এবং খাটো।
• পাগুলো খাটো এবং সোজাসুজিভাবে শরীরের সাথে যুক্ত। 
• পিছনের অংশ ও পিঠ চওড়া এবং লোম খাটে ও মিলানো ।
• গরু অপুষ্ট ও দূর্বল কিন্তু রোগা নয়।
০২.
কৃমিমুক্তকরন : পশু ডাক্তারের নির্দেশনা মত কৃমির ঔষধ ব্যবহার করতে হবে।গরু সংগ্রহের পর পরই পালের সব গরুকে একসাথে কৃমিমুক্ত করা উচিত। তবে প্রতি ৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি করে এনডেক্স বা এন্টিওয়ার্ম টাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।
০৩. টিকা প্রদান : পূর্ব থেকে টিকা না দেওয়া থাকলে খামারে আনার পরপরই সবগুলো গরুকে তড়কা, বাদলা এবং ক্ষুরা রোগের টিকা দিতে হবে। এ ব্যপারে নিকটস্থ পশু হাসপাতলে যোগাযোগ করতে হবে।
০৪. ঘর তৈরী ও আবসন ব্যবস্থাপনাঃ আমদের দেশের অধিকাংশ খামারী ২/৩ টি পশু মোটাতাজা করে থাকে, যার জন্য সাধারনত আধুনিক সেড করার প্রয়োজন পড়েনা। তবে যে ধরনের ঘরেই গরু রাখা হোক ঘরের মধ্যে পর্যন্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘরের মল- মূত্র ও অন্যান্য আবর্জনা যাতে সহজেই পরিস্কার করা যায় সে দিকে খেয়াল রেখে ঘরে তৈরী করতে হবে।
০৫. পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ গরু মোটতাজাকরনে দুই ধরনের খাদ্যের সমন্বয়ে রশদ (রেশন) তৈরী করা হ হয়। 
• আঁশ জাতীয়ঃ শুধু খড়, ইউ এম, সবুজ ঘাস ইত্যাদি । তবে এই প্রক্রিয়ায় খামারীদেরকে শুধু খড়ে পরিবর্তে ইউ এম এস খাওয়াতে হবে।
• দানারারঃ খৈল, ভূষি, চাষের কুড়া , খুদ, শুটকি মাছ, ঝিনুকের গুড়া, লবন ইত্যাদি।
খাওয়ানের পরিমানঃ গরুকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী, অর্থাৎ গরু যে পরিমান খেতে পারে সে পরিমান ইউ এম এস সরবারাহ করতে হব। 
• 
কোন খামারী সবুজ ঘাস খাওয়াতে চাইলে প্রতি ১০০ কেজি কাঁচা ঘাসের সাথে ৩
কেজি চিটাগুড়ে মিশিয়ে তা গরুতে খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে কাঁচা ঘাসেও
গরুকে পর্যাপ্ত পরিমানে সরবরাহ করতে হবে। 
খ . দানাদর মিশ্রণঃ খামারীদের সবিধার জন্য নীচের সারনীতে একটি দানাদার মিশ্রণ তৈরীর বিভিন্ন
উপাদান পরিমান সহ উল্লেখ করা হল। নিম্নের ছক অনুযায়ী অথবা প্রয়োজন
অনুযায়ী খামারীগণ বিভিন্ন পরিমান মিশ্রণ তৈরী করে নিতে পারবেন। 
• 
খাওয়ানের পরিমানঃ গরুকে তার দেহের ওজন অনুপাতে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে
হবে। পাশের দানাদার মিশ্রণটি গরুর ওজনের শতকরা ০.৮-১ ভাগ পরিমান সরবরাহ
করলেই চলবে।
• খাওয়ানোর সময়ঃ দানাদার মিশ্রণটি এবারের না খাইয়ে ভাগে ভাগ করে সকালে এবং বিকালে খাওয়াতে হবে।
• পানিঃ গরুকে পর্যান্ত পরিমানে পরিস্কার খামার পানি সরবরাহ করতে হবে।
• 
০৬. দৈহিক ওজন নির্ণয়ঃ মোটাতাজাকরন প্রক্রিয়ায় গরুকে দৈহিক ওজন নির্ণয়
গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কেননা গরুর খাদ্য সরবরাহ,ঔষধ সরবরাহ ইত্যাদি কাজগুলো
করতে হয় দৈহিক ওজনের ভিত্তিতে।
গরুর ওজন নির্নয়ের জন্য গরুকে সমান্তরাল
জায়গায় দাড় করাতে হবে এবং ছবির নির্দেশিকা মোতাবেক ফিতা দ্বারা দৈর্ঘ্য ও
বুকের বেড়ের মাপ নিতে হবে। এই মাপ নীচের সূত্রে বসালে গরুর ওজন পাওয়া যাবে।
দৈর্ঘ্য × বুকের বেড় (ফুট) × বুকের বেড় (ফুট) 
....................................... = ওজন (কিলোগ্রাম) ৬.৬০
উপসাংহারঃ উপরে বর্নিত পদ্বতি অনুযায়ী পালন করলে ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যেই গরু মোটাতাজাকরন করে বাজারজাত করা সম্ভব।
সূত্র : কৃষি তথ্য সার্ভিস

Tuesday, August 16, 2016

গাভীর খামার ব্যবস্থাপনা (হিসাব-নিকাশ)



বাংলাদেশে প্রতিবছর দুধের চাহিদা ১২.৫২ মিলিয়ন মেট্রিক টন, উৎপাদন হচ্ছে প্রতিবছর ২.২৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন, ঘাটতি প্রতিবছর ১০.২৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন। চাহিদার আলোকে আমাদের দেশে ছোট-বড় প্রায় ৪৭,৭১০টি ডেইরি খামার গড়ে উঠেছে। বর্তমানে শংকর জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে দুগ্ধ খামার স্থাপন একটি লাভজনক ব্যবসা। ফলে গাভী পালনে উন্নত ব্যবস্থাপনা, সঠিক প্রজনন, সুষম খাদ্য, রোগদমন ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে খামারিদের জানা প্রয়োজন।
ভালজাতের গাভীর বৈশিষ্ট্য
– মাথা : হালকা ও ছোট আকার, কপাল প্রশসত্দ, উজ্জ্বল চোখ, খাদ্যের প্রতি আগ্রহ। দৈহিক বৈশিষ্ট্য : দেহের সামনে দিক হালকা, পিছনের দিক ভারী ও সুসংগঠিত, দৈহিক আকার আকর্ষণীয়, শরীরের গঠন ঢিলা। পাজর : পাজরের হাড় স্পষ্ট, হাড়ের গঠন সামঞ্জস্যপুর্ণ। চামড়া : চামড়া পাতলা, চামড়ার নীচে অহেতুক চর্বি জমা থাকবে না, চামড়ার রঙ উজ্জ্বল, লোম মসৃণ ও চকচকে হবে। ওলান : ওলান বড় সুগঠিত ও দেহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বাটগুলো একই আকারের হবে। চারবাট সমান দূরত্বে ও সমানত্দরাল হবে। দুগ্ধশিরা : দুগ্ধশিরা মোটা ও স্পষ্ট, তলপেটে নাভীর পাশ দিয়ে দুগ্ধশিরা আঁকাবাঁকাভাবে বিস্তৃত থাকবে।
খামার ব্যবস্থাপনা:
খামার ব্যবস্থাপনা এক প্রকার কৌশল যার মাধ্যমে খামারের সম্পদ, সুযোগ ও সময়ের সমন্বয় ঘটানো যায়। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার সুফল হল-
১. সম্পদের মিতব্যয়িতা
২. স্বল্প সময়ে ফললাভ
৩. স্বল্প সময়ে অধিক উৎপাদন
৪. শক্তি ও শ্রমের অপচয় রোধ
৫. উৎপাদনে গুণগতমান ও উৎকর্ষতা লাভ।
সাধারণ ব্যবস্থাপনা:
গাভী তার গুণগতমান উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে। কিন্তু গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান যতই ভাল হোক এর ব্যবস্থাপনা সমন্ধে বিশেষ যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। দৈনন্দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, বিজ্ঞান সম্মত বাসস্থান, সুষম খাদ্য সরবরাহ, সঠিক প্রজনন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইত্যাদি উন্নত গাভী পালনের মৌলিক বিষয়।
বাসস্থান:
পারিবারিক পর্যায়ে বা খামার পর্যায়ে গাভী পালন করতে হলে গাভীর জন্য ভাল বাসস্থান প্রয়োজন। গাভীকে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা যেমন- ঝড়, বৃষ্টি, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও গরম এবং অন্যান্য নৈসর্গিক দৈব দুর্বিপাক, পোকামাকড়, চোর, বন্য-জীবজন্তু হতে রক্ষা করার জন্য যথোপযুক্ত বাসস্থান বা গোয়ালঘর প্রয়োজন। আমাদের আবহাওয়ার আলোকে ঘরে প্রচুর আলো বাতাস চলাচলের জন্য ঘরটি উত্তর-দক্ষিণমুখী হওয়া বাঞ্চনীয়। কোন অবস্থাতেই যেন ঘরে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা যেন না থাকে। এতে ঘরের মেঝেটি ইট বিছানো থাকলে ভাল হয়। ঘরের দুর্গন্ধ ও মশামাছি দমনের জন্য মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক দ্বারা ধোয়া প্রয়োজন।
গবাদিপশুর বাসস্থান দুই ধরণের হতে পারে : ১. উন্মুক্ত বা উদাম ঘর ২. বাঁধা ও প্রচলিত ঘর।
বাঁধা ঘরের বৈশিষ্ট্য:
এই পদ্ধতিতে গরুর গলায় দড়ি বা লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে পালন করা যায়। গাভীর খাদ্য, পানি গ্রহণ এবং দুধ দোহন একই স্থানে করা যায়।
সুবিধা :
বাঁধা থাকে বিধায় গাভীর দুধ দোহন সহজ হয়, প্রতিকূল আবহাওয়ায় পশু নিরাপদ থাকে, কৃত্রিম প্রজননের জন্য বেশ সুবিধাজনক, নির্ধারিত অল্প জায়গায় পশু পালন করা যায়।
অসুবিধা:
এই পদ্ধতিতে ঘর তৈরি খরচ বেশি, পশুর সহজে ঘোরাফেরার ব্যবস্থা থাকে না, এতে পশুর ব্যয়াম না হওয়াতে বিভিন্ন ধরনের রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে, একই জায়গায় দিনরাত্রি বাঁধা থাকে বলে মেঝে সঁ্যাতসঁ্যাতে থাকে।
বাঁধা ঘরের নকশা:
এই পদ্ধতির গো-শালায় পশু সব সময় বাঁধা অবস্থায় থাকে। এজন্য গো-শালা যাতে সহজে পরিস্কার করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঘর তৈরি করা প্রয়োজন। প্রচলিত গো-শালা দুই ধরনের হয়-
একসারি বিশিষ্ট গো-শালা:
অল্প সংখ্যক গবাদি পশুর জন্য একটি লম্বা সারিতে বেঁধে পালনের জন্য এই গো-শালা তৈরি করা হয়। প্রতিটি পশুকে পৃথক রাখার জন্য জিআইপাইপ দিয়ে পার্টিশন দেয়া হয়, পার্টিশনের পাইপ লম্বায় ৯০ সে.মি. এবং উচ্চতায় ৪৫ সে.মি. হওয়া প্রয়োজন, একটি গরুর দাঁড়াবার স্থান ১৬৫ সে.মি., পাশের জায়গা ১০৫ সে.মি., খাবার পাত্র ৭৫ সে.মি. এবং নালা ৩০ সে.মি. হওয়া প্রয়োজন, একই মাপে পশুর সংখ্যা অনুযায়ী জায়গা নির্ধারণ করে গো-শালা তৈরি করা হয়, গো-শালা হবে একচালা বিশিষ্ট ঘর, ঘরের ছাদ প্রায় ৩০০ সে.মি. উঁচুতে করতে হয়।
দুই সারি বিশিষ্ট গো-শালা:
অল্প জায়গায় অধিক পশুপালনের জন্য এ ধরণের গো-শালা তৈরি করা হয়, এ ধরনের গো-শালায় পশুকে দুভাবে রাখা যায়, মুখোমুখি পদ্ধতি ও বাহির মুখ পদ্ধতি। মুখোমুখি পদ্ধতিতে দুই সারি পশু সামনাসামনি থাকে। দুইসারি খাবারের পাত্রের মাঝখানে ১২০ সে.মি. চওড়া রাসত্দা থাকে- যা পাত্রে খাবার দেবার জন্য ব্যবহার করা হয়, একটি গরুর জন্য দাঁড়ানোর জায়গা ৫.৫ ফুট, পাশের জায়গা ৩.৫ ফুট।
সুবিধা:
একই সাথে দুইসারি পশুকে সহজে খাবার ও পানি সরবরাহ করা যায়, দুধ দোহনের জন্য অধিকতর আলো পাওয়া যায়, পশু নিজ জায়গায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, পরিচর্যাকারী সহজে চলাফেরা করতে পারে।
একটি গাভীকে নিম্ন তালিকা অনুসারে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে :
কাঁচা ঘাস (সবুজ ঘাস) ২০-৩০ কেজি, দানাদার খাদ্য মিশ্রণ: ১৮-২০% প্রোটিন সমৃদ্ধ: ১ম ৩ কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য- ০৩ কেজি, পরবর্তী প্রতি কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য-০.৫ কেজি, লবণ-৫০-৬০ গ্রাম, পরিস্কার পানি-প্রয়োজন মত।
পরিচর্যা:
গাভীর সঠিক পরিচর্যা না করলে উন্নত জাতের গাভী পালন করেও গাভীকে সুস্থ সবল উৎপাদনক্ষম রাখা সম্ভব হবে না। ফলে গাভী হতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ দুধ, মাংস পাওয়া যাবে না এবং গাভী পালন অলাভজনক হবে।
দুধ দোহন:
গাভীর দুধ দৈনিক ভোরে একবার এবং বিকালে একবার নির্দিষ্ট সময়ে দোহন করতে হবে। দুধ দোহনের পূর্বে গাভীর উলান ও দোহনকারীর হাত পরিস্কার পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
প্রজনন:
গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পিত প্রজনন ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। যে ষাড়ের মা, দাদী, নানী যত বেশি পরিমাণ দুধ দেয় তার বাচ্চার দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা ততই বেশি হয়। তাই যখন গাভী গরম হবে তখন গুণগতমানসম্পন্ন ষাড়ের বীজ দ্বারা নিকটস্থ কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র হতে গাভীকে প্রজনন করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
খামারের রেকর্ড সংরক্ষণ:
খামারের লাভক্ষতি নিরূপণ আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাবের উপর নির্ভরশীল। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিয়য়ে মূল্যায়ন করা দরকার। খামারের উৎপাদিত পণ্যের হিসাব, ক্রয়, বিক্রয়, জন্ম, মৃতু্য এবং কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমের জন্য সঠিক তথ্য রক্ষাকল্পে রেকর্ড সংরক্ষণ করা অত্যাবশ্যকীয়।
উন্মুক্ত বাসস্থানে নিম্নোক্ত হারে জায়গার প্রয়োজন:
পশুর ধরণ ঘরে প্রতি পশু স্থান প্রতি পশুর জন্য মুক্ত স্থান খাদ্যপাত্র
বাড়ন্ত বাছুর ২.৫-৩ বর্গ মিটার ৫-৬ বর্গ মিটার ৩৭-৫০ সেন্টিমিটার
গাভী ৩-৩.৫ বর্গ মিটার ৮-১০ বর্গ মিটার ৫০-৬০ সেন্টিমিটার
গর্ভবতী গাভী ১০-১২ বর্গ মিটার ১৮-২০ বর্গ মিটার ৬০-৭০ সেন্টিমিটার
গাভী পালন : আয় বাড়তে করণীয়
হয়তো আপনার বাসা সংলগ্ন কিছু জায়গা পতিত অবস্থায় রয়েছে। সেখানে গাভী, হাঁস-মুরগির খামার ও মাছ চাষ করে বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারেন। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে নিতে পারেন। একদিকে ৮৪ ফুট, আরেক দিকে ৬০ ফুট—এমনি একটি জায়গায় কী কী করবেন, কত পুঁজি নিয়ে নামবেন এবং কবে থেকে লাভবান হতে থাকবেন তার একটি বর্ণনা দেয়া হলো।
সংখ্যা ৮টি। জায়গার পরিমাণ ১৬ ফুট – ৫০ ফুট।
খরচের হিসাব :
১. গাভীর ঘর নির্মাণ (উপরে টিন, চারদিকে দেয়াল) ১০,০০০ টাকা;
২. ৮টি গাভী ক্রয় (বাছুরসহ দুধের গাভী) প্রতিটি ৫০,০০০ করে ৮,০০,০০০ টাকা;
৩. খানার পাত্রসহ আনুষঙ্গিক খরচ ৪,০০০ টাকা;
৪. প্রতিদিন খাদ্য খরচ (১টির জন্য ১০০ টাকা) ৮টির জন্য (৮০০ – ৩০) ২৮,০০০ টাকা (প্রতি মাসে);
৫. ওষুধ, ভিটামিন (মাসিক) ১৫০০ টাকা;
৬. টিউবওয়েল স্থাপন ৮,০০০ টাকা;
৭. পানি সাপ্লাইয়ের মোটর ৮,০০০ টাকা;
৮. ৪টি ফ্যান ১৬,০০০ টাকা; মোট খরচ ৯,৮৫,০০০ টাকা।
গাভীর খামার থেকে আয় :
প্রতিটি গাভী দৈনিক ১৮ কেজি দুধ দেবে। প্রতি কেজির দাম ৩০ টাকা। একটি গাভীর দুধ থেকে প্রতিদিন গড়ে পাওয়া যাবে ৩০ – ১৮ = ৫৪০ টাকা। তাহলে ৮টি গাভীর দুধ থেকে প্রতিদিন ৫৪০ – ৮ = ৪৩২০ টাকা আয় হবে। ফলে ৩০ দিনে ৮টি গাভীর দুধ বিক্রি থেকে ৪৩২০ – ৩০ = ১,২৯,৬০০ টাকা। গাভী প্রায় ৮ মাস ধরে গড়ে ১৮ কেজি দুধ দেবে। এরপর দুধের পরিমাণ কমতে থাকবে। দুধ বিক্রি থেকে ৮ মাসে আয় ১,২৯,৬০০ – ৮ = ১০,৩৬,৮০০ টাকা। প্রাথমিক খরচ ৯,৮৫,০০০ টাকা; মোট আয় = ৫১,৮০০ টাকা। ৮ মাস পর নিট লাভ ৫১,৮০০ টাকা।
৮ মাস পর দুধ দেয়ার পরিমাণ কমে যাবে। গড়ে ৮ কেজিতে নেমে আসবে। তাহলে ৮টি গাভী থেকে ৬৪ কেজি দুধ পাওয়া যাবে। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে ৬৪ কেজি দুধ থেকে দৈনিক আয় ১৯২০ টাকা। ৩০ দিনে আয় ১৯২০ – ৩০ = ৫৭,৬০০। ৮ মাসের আয় ৫৭,৬০০ – ৮ = ৪,৪০,৮০০ টাকা। তাহলে প্রথম ৮ মাসে দুধ বিক্রি থেকে আয় ১০,৩৬,৮০০ টাকা + পরবর্তী ৪ মাসে আয় ৪,৪০,৮০০ টাকা। মোট দুধ বিক্রি থেকে আয় ১৪,৭৭,৬০০ টাকা।
৮ মাস পর দুধ দেয়ার পরিমাণ কমে যাবে। তখন কৃত্রিম প্রজনন দিতে হবে। কৃত্রিম প্রজনন দেয়ার প্রায় ৮ মাস পর গাভী বাচ্চা দেবে। এরপর প্রতিবার ২০ কেজি করে দুধ দেবে। এ গাভী ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত পোষা যাবে। ১ বছর পর এক-একটি বাছুর প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে। ৩ বছর পর বাছুরগুলো আবার গর্ভবতী হবে। তখন এক-একটির দাম ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়াবে। এ কারণে বাছুরগুলো রেখে ষাঁড়গুলো বিক্রি করে দিতে হবে।
গাভীকে দানাদার খাদ্য, কাঁচা ঘাস, খড়, চালের কুঁড়া ও প্রচুর পরিমাণে পানি দিতে হবে। পরবর্তী বছরগুলোতে ঘর নির্মাণ খরচ লাগবে না, গাভীও কিনতে হবে না। ৮ মাস পর আবার গাভীগুলো দুধ দেবে। আগের বাছুর বড় হবে। এসময় ঘর নির্মাণ খরচ, গাভী ক্রয় খরচ, টিউবওয়েল নির্মাণ খরচ আর লাগবে না, তবে খাদ্য খরচ বেড়ে যাবে। আগের ৮টি গাভী, ৮টি বড় বাছুর, নতুন ৮টি ছোট বাছুর সব মিলে ২৪টি গরু হবে। আগের বাছুরের মধ্যে যদি ষাঁড় থাকে তাহলে বিক্রি করে দিতে হবে। ৮টি বাছুরের মধ্যে যদি ৫টি ষাঁড় থাকে তাহলে প্রতিটি ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করলে ১৫,০০০ – ৪ = ৬০.০০০ টাকা আয় হবে। এর বেশিও আয় হতে পারে।
৮ মাস পর বাছুর প্রসবের পরে খরচ :
খাদ্য খরচ বেড়ে গিয়ে দাঁড়াবে দৈনিক ১,৫০০ টাকা। তাহলে এক মাসে খাদ্য খরচ ১,৫০০ – ৩০ = ৪৫,০০০ (প্রতি মাসে)। বিদ্যুত্, পানি, ওষুধ, ভিটামিন ৫,০০০ টাকা। মোট ব্যয় ৫০,০০০ টাকা।
আয় :
দুধ বিক্রি থেকে এক মাসে আয় ১,২৯,৬০০ টাকা; ১,২৯,৬০০ – ৫০,০০০ = ৭৯,৬০০ টাকা নিট লাভ। এছাড়া প্রতি বছর বাছুর বিক্রি থেকে এবং গোবর বিক্রি করেও টাকা অর্জন করা যাবে। গাভীগুলো ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত দুধ দেয়ার পর এগুলো বিক্রি করে দিতে হবে। এ ধরনের একটি গাভী ৩০ হাজার টাকায়

পূর্ণ প্রশিক্ষণ নিয়ে গাভীর খামারের উপর বিনিয়োগ যে কোন খামারের চেয়ে অধিক লাভজনক

বাংলাদেশে প্রতিবছর দুধের চাহিদা ১২·৯২ মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি, কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে প্রতিবছর প্রায় ২·৭৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন, ঘাটতি প্রতিবছর ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও বেশি। চাহিদার আলোকে আমাদের দেশে ছোট-বড় প্রায় ৪৭,৭১০টি ডেইরি খামার গড়ে উঠেছে (২০১০-২০১১ এর তথ্যানুযায়ী)।
বর্তমানে শংকর জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে দুগ্ধ খামার স্থাপন একটি লাভজনক ব্যবসা। ৮/১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলে প্রতি মাসেই ১ লক্ষ টাকা আয় করা যায় অনায়াসেই। তবে তিনটি জরুরী বিষয় আয়ত্বে আনতে হবে শুরুতেই। এবং এই তিনটির কোন একটি অবশ্যই বাদ থাকতে পারবে না।
১. যুব উন্নয়ন বা যে কোন সরকারী-বেসসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহন করা। এক বার প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর পরিপূর্ণ আয়ত্তে না আসলে পুনরায় প্রশিক্ষণ গ্রহন করা। ২ বার পরিপূর্ণ আয়ত্তে না আসলে ৩য় বার প্রশিক্ষণ গ্রহন করা।
২. যে কোন একটি খামারে কমপক্ষে ৬/৮ মাস জড়িত থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেয়া। এক বছর জড়িত থাকতে পারলে আরো ভাল।
৩. অন্য কারো বুদ্ধি বা জ্ঞানের উপর ভরসা না করে প্রথমিক পর্যায়ে মূল বিনিয়োগের পাঁচ ভাগের এক ভাগ বিনিয়োগ করা। এক বছর পর বাকী মূলধন বিনিয়োগ করা। অর্থ্যাৎ কেউ ২০ লক্ষ টাকা মূলধন বাজেট করলে প্রথমে চার লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এক বছর পর বাকী টাকা বিনিয়োগ করাতে হবে।
(এই তিনটি বিষয় খেয়াল রাখতে পারলে একজন খামারী সব খরচ বাদ দিয়েও প্রতি মাসে তার মোট বিনিয়োগের ১০/১২% লাভ করতে পারবেন। এই তিনটি বিষয় আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করা)
অর্থ্যাৎ একজন খামারীর গাভী পালনে উন্নত ব্যবস্থাপনা, সঠিক প্রজনন পদ্ধতি, সুষম খাদ্য তৈরী, রোগদমন ও প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ের উপর আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তবে সব কিছুর পূর্বে প্রয়োজন গাভীর খামার ব্যবস্থাপনার উপর পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ, সেই সাথে মাঝারি/বড় আকারের একটি খামারে কমপক্ষে ৬/৮ মাস জড়িত থাকার বাস্তব অভিজ্ঞতা।
ভালজাতের গাভীর বৈশিষ্ট্য-
মাথাঃ হালকা ও ছোট আকার, কপাল প্রশস্ত, উজ্জ্বল চোখ, খাদ্যের প্রতি আগ্রহ।
দৈহিক বৈশিষ্ট্যঃ দেহের সামনে দিক হালকা, পিছনের দিক ভারী ও সুসংগঠিত, দৈহিক আকার আকর্ষণীয়, শরীরের গঠন ঢিলা।
পাজরঃ পাজরের হাড় স্পষ্ট, হাড়ের গঠন সামঞ্জস্যপুর্ণ।
চামড়াঃ চামড়া পাতলা, চামড়ার নীচে অহেতুক চর্বি জমা থাকবে না, চামড়ার রঙ উজ্জ্বল, লোম মসৃণ ও চকচকে হবে।
ওলানঃ ওলান বড় সুগঠিত ও দেহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বাটগুলো একই আকারের হবে। চারবাট সমান দূরত্বে ও সমান্তরাল হবে। দুগ্ধশিরাঃ দুগ্ধশিরা মোটা ও স্পষ্ট, তলপেটে নাভীর পাশ দিয়ে দুগ্ধশিরা আঁকাবাঁকাভাবে বিস্তৃত থাকবে।
খামার ব্যবস্থাপনাঃ
খামার ব্যবস্থাপনা এক প্রকার কৌশল যার মাধ্যমে খামারের সম্পদ, সুযোগ ও সময়ের সমন্বয় ঘটানো যায়। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার সুফল হল-
১· সম্পদের মিতব্যয়িত
২· স্বল্প সময়ে ফললাভ
৩· স্বল্প সময়ে ও ব্যয়ে অধিক উৎপাদন
৪· শক্তি ও শ্রমের অপচয় রোধ
৫· উৎপাদনে গুণগতমান ও উৎকর্ষতা লাভ।
সাধারণ ব্যবস্থাপনাঃ
গাভী তার গুণগতমান উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকে। কিন্তু গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান যতই ভাল হোক এর ব্যবস্থাপনা সমন্ধে বিশেষ যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। দৈনন্দিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, বিজ্ঞান সম্মত বাসস্থান, সুষম খাদ্য সরবরাহ, সঠিক প্রজনন, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইত্যাদি উন্নত গাভী পালনের মৌলিক বিষয়।
বাসস্থানঃ
পারিবারিক পর্যায়ে বা খামার পর্যায়ে গাভী পালন করতে হলে গাভীর জন্য ভাল বাসস্থান প্রয়োজন। গাভীকে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা যেমন- ঝড়, বৃষ্টি, অতিরিক্ত ঠাণ্ডা অথবা অতিরিক্ত গরম এবং অন্যান্য নৈসর্গিক দৈব দুর্বিপাক, পোকামাকড়, চোর, বন্য-জীবজন্তু হতে রক্ষা করার জন্য যথোপযুক্ত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন বাসস্থান বা গোয়ালঘর প্রয়োজন। আমাদের আবহাওয়ার আলোকে ঘরে প্রচুর আলো বাতাস চলাচলের জন্য ঘরটি উত্তর-দক্ষিণমুখী হওয়া বাঞ্চনীয়। কোন অবস্থাতেই যেন ঘরে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা যেন না থাকে। এতে ঘরের মেঝেটি ইট বিছানো থাকলে ভাল হয়। ঘরের দুর্গন্ধ ও মশামাছি দমনের জন্য মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক দ্বারা ধোয়া প্রয়োজন।
গবাদিপশুর বাসস্থান দুই ধরণের হতে পারেঃ
১· উন্মুক্ত বা উদাম ঘর
২· বাঁধা ও প্রচলিত ঘর।
বাঁধা ঘরের বৈশিষ্ট্যঃ এই পদ্ধতিতে গরুর গলায় দড়ি বা লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে পালন করা যায়। গাভীর খাদ্য, পানি গ্রহণ এবং দুধ দোহন একই স্থানে করা যায়।
সুবিধাঃ বাঁধা থাকে বিধায় গাভীর দুধ দোহন সহজ হয়, প্রতিকূল আবহাওয়ায় পশু নিরাপদ থাকে, কৃত্রিম প্রজননের জন্য বেশ সুবিধাজনক, নির্ধারিত অল্প জায়গায় পশু পালন করা যায়।
অসুবিধাঃ এই পদ্ধতিতে ঘর তৈরি খরচ বেশি, পশুর সহজে ঘোরাফেরার ব্যবস্থা থাকে না, এতে পশুর গাভীর বিভিন্ন ধরনের রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে, একই জায়গায় দিনরাত্রি বাঁধা থাকে বলে মেঝে স্যাঁতস্যাঁতে থাকে।
বাঁধা ঘরের নকশাঃ এই পদ্ধতির গো-শালায় পশু সব সময় বাঁধা অবস্থায় থাকে। এজন্য গো-শালা যাতে সহজে পরিস্কার করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ঘর তৈরি করা প্রয়োজন। প্রচলিত গো-শালা দুই ধরনের হয়-
একসারি বিশিষ্ট গো-শালাঃ অল্প সংখ্যক গবাদি পশুর জন্য একটি লম্বা সারিতে বেঁধে পালনের জন্য এই গো-শালা তৈরি করা হয়। প্রতিটি পশুকে পৃথক রাখার জন্য জিআইপাইপ দিয়ে পার্টিশন দেয়া হয়, পার্টিশনের পাইপ লম্বায় ৯০ সে·মি· এবং উচ্চতায় ৪৫ সে·মি· হওয়া প্রয়োজন, একটি গরুর দাঁড়াবার স্থান ১৬৫ সে·মি·, পাশের জায়গা ১০৫ সে·মি·, খাবার পাত্র ৭৫ সে·মি· এবং নালা ৩০ সে·মি· হওয়া প্রয়োজন, একই মাপে পশুর সংখ্যা অনুযায়ী জায়গা নির্ধারণ করে গো-শালা তৈরি করা হয়, গো-শালা হবে একচালা বিশিষ্ট ঘর, ঘরের ছাদ প্রায় ৩০০ সে·মি· উঁচুতে করতে হয়।
দুই সারি বিশিষ্ট গো-শালাঃ অল্প জায়গায় অধিক পশুপালনের জন্য এ ধরণের গো-শালা তৈরি করা হয়, এ ধরনের গো-শালায় পশুকে দুভাবে রাখা যায়, মুখোমুখি পদ্ধতি ও বাহির মুখ পদ্ধতি। মুখোমুখি পদ্ধতিতে দুই সারি পশু সামনাসামনি থাকে। দুইসারি খাবারের পাত্রের মাঝখানে ১২০ সে·মি· চওড়া রাস্তôা থাকে- যা পাত্রে খাবার দেবার জন্য ব্যবহার করা হয়, একটি গরুর জন্য দাঁড়ানোর জায়গা ৫·৫ ফুট, পাশের জায়গা ৩·৫ ফুট।
সুবিধাঃ একই সাথে দুইসারি পশুকে সহজে খাবার ও পানি সরবরাহ করা যায়, দুধ দোহনের জন্য অধিকতর আলো পাওয়া যায়, পশু নিজ জায়গায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, পরিচর্যাকারী সহজে চলাফেরা করতে পারে।
গাভীর খাদ্য সরবরাহ -
কাঁচা ঘাস (পরিস্কার স্থান থেকে সংগ্রহ করা সবুজ ঘাস) ২০-৩০ কেজি, দানাদার খাদ্য মিশ্রণঃ ১৮-২০% প্রোটিন সমৃদ্ধঃ ১ম ৩ কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য- ০৩ কেজি, পরবর্তী প্রতি কেজি দুধ উৎপাদনের জন্য-০·৫ কেজি, লবণ-৫০-৬০ গ্রাম, পরিস্কার পানি-প্রয়োজন মত।
পরিচর্যাঃ
গাভীর সঠিক পরিচর্যা না করলে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের উন্নত জাতের গাভী পালন করেও গাভীকে সুস্থ সবল রোগমুক্ত উৎপাদনক্ষম রাখা সম্ভব হবে না। ফলে গাভী হতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ দুধ, গোশত পাওয়া যাবে না এবং গাভী পালন অলাভজনক হবে। গাভী মারা যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে। এজন্য একজন খামারীকে আমি প্রথমেই পরামর্শ দিবে যে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে গাভীর খামার করার আগে কমপক্ষে ৬/৮ মাস অবশ্যই কোন একটি গাভীর খামারের সাথে লেগে থাকতে হবে। অন্যথায় খামার শুরু করে এক বছর পরে খামারীকে অবশ্যই অবশ্যই লস গুনতে হবে।
দুধ দোহনঃ
গাভীর দুধ দৈনিক ভোরে একবার এবং বিকালে একবার নির্দিষ্ট সময়ে দোহন করতে হবে। দুধ দোহনের পূর্বে গাভীর উলান ও দোহনকারীর হাত পরিস্কার ডেটল মিশ্রিত পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
প্রজননঃ
গাভীর বংশানুক্রমিক গুণগতমান উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পিত প্রজনন ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। যে ষাড়ের মা, দাদী, নানী যত বেশি পরিমাণ দুধ দেয় তার বাচ্চার দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা ততই বেশি হয়। তাই যখন গাভী ষাড়ের সাথে মিশতে চাবে, তখন গুণগতমানসম্পন্ন ষাড়ের বীজ দ্বারা নিকটস্থ কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র হতে গাভীকে প্রজনন করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
খামারের রেকর্ড সংরক্ষণঃ
খামারের লাভক্ষতি নিরূপণ আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাবের উপর নির্ভরশীল। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিয়য়ে মূল্যায়ন করা দরকার। খামারের উৎপাদিত পণ্যের হিসাব, ক্রয়, বিক্রয়, জন্ম, মৃত্যু এবং কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রমের জন্য সঠিক তথ্য রক্ষাকল্পে রেকর্ড সংরক্ষণ করা অত্যাবশ্যকীয়। এটি একটি খামারের অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
উন্মুক্ত বাসস্থানে নিম্নোক্ত হারে জায়গার প্রয়োজনঃ
পশুর ধরণ ঘরে প্রতি পশু স্থান প্রতি পশুর জন্য মুক্ত স্থান খাদ্যপাত্র
বাড়ন্ত বাছুর ২·৫-৩ বর্গ মিটার ৫-৬ বর্গ মিটার ৩৭-৫০ সেন্টিমিটার
গাভী ৩-৩·৫ বর্গ মিটার ৮-১০ বর্গ মিটার ৫০-৬০ সেন্টিমিটার
গর্ভবতী গাভী ১০-১২ বর্গ মিটার ১৮-২০ বর্গ মিটার ৬০-৭০ সেন্টিমিটার।
আমি দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসি। এই ভালবাসার মানসিকতা নিয়েই প্রতিষ্ঠা করেছি এম.আর.আর. ফাউন্ডেশন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি; বেকার যুবকরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষিত হয়ে নিজেই নিজের বেকারত্বের সমাধান করতে পারেন। বিশেষ প্রয়োজনে আমাকে ০১৯১১৭৬৬৪৬৩ নাম্বারে পাবেন।

Sunday, July 24, 2016

ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম


ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম, বর্তমান যুগে অত্যন্ত জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর। যাকে প্রফেশনাল ভাষাতে অনেকেই ভিডিও ব্লগ বা ভ্লগ বলছে। ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করলে আর অ্যাডসেন্স বসালেইও ইনকাম শুরু হয়ে যাবেনা। ইউটিউবের চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করেছেন ইনকাম করার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু ভিজিটর না হলেতো ইনকাম নাই। ভিজিটর কিভাবে বাড়াবেন সেই বিষয়টি নিয়েই এ টিউনে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা পাবেন।



১ম পর্বের কাজ: (ভিডিও তৈরি এবং প্রস্তুতি)
ক) মানসম্মত ভিডিও নিয়ে আসে প্রচুর ভিজিটর। এটা সবসময়ে মাথাতে রাখতে হবে।
মানসম্মত ভিডিওর ৩টি বিষয়ের উপর নির্ভর করে:
- কনটেন্ট: ভ্যালু ক্রিয়েট করে এরকম ভিডিও, কিংবা বিনোদিত করে এরকম কিংবা ফানি ভিডিও। অবশ্যই ইউনিক হবে।
- স্মার্ট প্রেজেন্টশন: ভিডিও কোয়ালিটি, সাউন্ড কোয়ালিটি, প্রফেশনাল এডিট।
- অ্যাংগেজমেন্ট: যে ভিডিও সংশ্লিষ্ট মানুষদের মনে দাগ কাটতে পারে, সেই রকম ভিডিও
খ) ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোডের সময় অনপেইজ অপটিমাইজেশন:
- টাইটেল: ভিডিওটির টাইটেলে সার্চ হয় এরকম কোন কীওয়ার্ড ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ত টাইটেল
- ডেসক্রিপশন: ভিডিওটির ডেসক্রিপশনে সংক্ষিপ্তভাবে ভিডিওটির ভিতরে কি পাবে, মানুষের ভিতরে আগ্রহ জন্মাবে এরকম ভাবে বর্ণনা লিখতে হবে। অবশ্যই কীওয়ার্ড বসানোর ব্যপারটি মাথাতে রাখতে হবে। ১ম লাইনেই কীওয়ার্ডটি যাতে থাকে।
- ট্যাগ: ট্যাগে সার্চ হতে পারে এরকম সম্ভাব্য সকল কীওয়ার্ডগুলো কমা কমা দিয়ে বসিয়ে দিন।
- থাম্বনেইল: থাম্বনেইল ইমেজের ক্ষেত্রেও সচেতন হোন। ভিডিওটি দেখতে আগ্রহী হবে থাম্বনেইলটি দেখে।

♦ ১ম পর্বের কাজ শেষ, এবার দ্বিতীয় পর্ব: (ভিডিও মার্কেটিং)
এত যত্ন করে ভিডিওটি বানালেন, কিন্তু মানুষ দেখলোনা, তাহলে কষ্ট সব বৃথা হয়ে যাবে। তাই নিজের এ সৃষ্টিকে যতটা সম্ভব, বেশি মানুষের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করুন। মানুষ কোথায় কোথায় থাকে একবার চিন্তা করে বের করুন, নিজের মাথা খাটিয়ে। তাহলেই আপনি উত্তর পেয়ে যাবেন কি করতে হবে।
- মানুষ যেকোন সময় ইউটিউবে এসে সার্চ করে। সেই সার্চে আপনার ভিডিওটি উপরে থাকলে আপনার ভিডিওতে দর্শক পেয়ে যাবেন।
- সোশ্যালমিডিয়া সাইটগুলোতে বর্তমানে সবচাইতে বেশি মানুষ থাকে। ইন্টারেস্ট জাগানোর মত মেসেজ লিখে সোশ্যালমিডিয়াতে ভিডিওটি শেয়ার করলে এখান থেকে প্রচুর ভিজিটর পাবেন।
- ব্লগ এবং নিউজ সাইটগুলোতে বর্তমান যুগে বিশাল সংখ্যক মানুষ নিয়মিত ভিজিট করে। এধরনের সাইটগুলোতে কোন টিউনের সাথে রেফারেন্স হিসেবে ভিডিওটি যুক্ত করুন।
- সোশ্যালমিডিয়া কিংবা ব্লগে একবার ভিডিও শেয়ার করলেই ভিজিটর পেয়ে যাওয়ার আশা করা উচিত হবেনা। বিভিন্ন কৌশলে প্রচুর শেয়ার করুন। তবে বিরক্তির সৃষ্টি না করে আগ্রহ জন্মিয়ে শেয়ার করতে হবে।
- চ্যানেল রিলেটেড গুরুত্বপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে গ্রুপ বা কমিউনিটি এবং ভিডিও রিলেটেড ব্লগ খুলতে হবে। ভাল ফলাফল পাবেন তাতে।

♦ সবশেষ পরামর্শ:
- টাকা ইনকামের জন্য ভিডিও না বানিয়ে মানুষের উপকারের জন্য কিংবা বিনোদিত করতে ভিডিও প্রস্তুত করুন।
- ভিডিও কনটেন্ট ইউনিক রাখুন। ভিডিওতে ব্যবহৃত অডিও ব্যবহারের ক্ষেত্রেও যাতে ডুপ্লিকেট না হয়।
- মানুষের আগ্রহের বিষয়টি অ্যানালাইস করে তারপর ভিডিওর কনটেন্ট প্লান করুন।
- ভিডিওটি সম্পর্কে যারা আগ্রহী হতে পারে, তাদের কাছেই ভিডিওটির মার্কেটিং করুন। অন্যদের কাছে করে লাভ হবেনা।
ভিডিওতে ভিউ বাড়তে থাকলে এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে খাকলে চ্যানেলে সাবস্ক্রাইভ বাড়তে থাকবে।

Thursday, July 21, 2016

বাড়ি থেকে চিরতরে দূর করুন, ইদুর, তেলাপোকা, মাছি, ছারপোকা, টিকটিকি ও মশা!


নানা কারণে ঘর বাড়িতে পোকামাকড়ের উপদ্রব হয়। আর একবার কোন পোকা ঘরে বসবাস শুরু করলে তা আর সহজে যেতে চায় না। বিশেষ করে মশা, তেলাপোকা, ছারপোকা ইত্যাদি। আর বেশীরভাগ বাড়িতেই তো একেবারে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে প্রচুর পরিমাণে ইঁদুর এবং টিকটিকি। কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে খুব সহজে এবং ঘরোয়া উপায়ে এদের দূর করা সম্ভব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এসব উপদ্রব থেকে রক্ষার কিছু উপায়।
১। ইঁদুর
ঘর বাড়ির খুব সাধারণ একটি সমস্যা হল ইঁদুর। এই ইঁদুর দূর করবে পেপারমেণ্ট। ইঁদুর পেপারমেণ্টের গন্ধ সহ্য করতে পারে না। একটি তুলোর বলে পেপারমেন্ট অয়েল ডুবিয়ে নিন। এবার তুলোর বলটি ইদুরের বাসার কাছে রেখে দিন। পেপারমেণ্টের গন্ধ শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করে তাদের নিঃশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দিবে এবং তারা মারা যাবে।
২। তেলাপোকা
তেলাপোকা নেই এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া ভার! রান্নার মশলা দিয়ে দূর করুন এই তেলাপোকা। কিভাবে? গোলমরিচ গুঁড়া, পেঁয়াজ, রসূন এবং পানি দিয়ে পেষ্ট তৈরি করে নিন। পেষ্ট কিছুটা তরল করে তৈরি করবেন। এবার এটি স্প্রের বোতলে ভরে রাখুন। যেখানে তেলাপোকা দেখবেন সেখানে স্প্রে করুন। দেখবেন তেলাপোকা পালিয়ে গেছে। শুধু তেলাপোকা না অন্যান্য পোকা মাকড়ের হাত থেকে আপনার ঘরকে রক্ষা করবে।
৩। মাছি
মাছি তাড়ানোর অনেক উপায় আছে। কিন্তু সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হল তুলসী পাতা। বারান্দায় বা জানলার কাছে একটি তুলসী গাছ রাখুন। দেখবেন মাছি আপনার বাসায় আসছে না। এছাড়া বিভিন্ন এ্যাসেন্সিয়াল অয়েল যেমন ল্যাভেন্ডার এবং ইউক্যালিপ্টাস অয়েল মাছি তাড়াতে অনেক বেশি কার্যকর।
৪। ছারপোকা
ছারপোকা দূর করতে পেঁয়াজের রস অনেক বেশি কার্যকরী। একটি স্প্রে বোতলে পেঁয়াজের রস ভরে নিন। তারপর এটি স্প্রে করে দিন বিছানা, সোফার চারপাশে যেখানে ছারপোকা রয়েছে।
৫। টিকটিকি
ঘরের আরেকটি উপদ্রব হল টিকটিকি। এই টিকটিকি হাত থেকে বাঁচার জন্য ঘরে কোণে বিশেষ করে ভেন্টিলেটরের কাছে ডিমের খালি খোসা ঝুলিয়ে রাখুন। ডিমের গন্ধ টিকটিকিকে দূরে রাখবে। তবে সেদ্ধ নয়, অবশ্যই কাঁচা ডিমের খোসা ঝোলাবেন। এছাড়াও ঘরে ময়ূরের পালক রাখতে পারেন। টিকটিকি ঘরের ত্রিসীমানায় ঘেঁষবে না।
৬। মশা
মশা তাড়ানোর জন্য কত রকমের স্প্রে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু মশা তাড়ানোর সবচেয়ে সহজ আর কার্যকরী উপায় হল নিমের তেলের ব্যবহার। প্রতিদিন শরীরে নিমের তেল ব্যবহার করুন। এটি আপনাকে মশা থেকে দূরে রাখবে এবং তার সাথে সাথে ত্বকও সুস্থ এবং ভালো রাখবে।

Wednesday, July 20, 2016

ছারপোকা দূর করার কার্যকরী উপায়


মূলত বিছানা, বালিশ বা সোফা এইসকল জিনিসে ছারপোকার উপদ্রব অনেক বেশি হয়ে থাকে। ছারপোকার কামড়ে জ্বালাপোড়া, ব্যথা এবং অ্যালার্জির সমস্যা শুরু হয়ে যায় যা মারাত্মক আঁকার ধারণ করতে পারে। তাই বিছানাপত্র থেকে ছারপোকার উপদ্রব যতোটা সম্ভব দূর করে ফেলা উচিত।


ছারপোকা সাধারণত রাতেই অধিক সক্রিয় থাকে এবং মানুষের অগোচরে রক্ত চুষে নেয়। চলুন জেনে নেয়া যাক কি করে মুক্তি পাবেন বিরক্তিকর ছারপোকার সমস্যা থেকে-

১. আসবাবাপত্র ও লেপ তোশক পরিষ্কার রাখার সাথে সাথে নিয়মিত রোদে দিন। এতে করে ছারপোকার আক্রমণ কমে যাওয়ার সাথে সাথে ছারপোকা থাকলে সেগুলোও মারা যাবে।

২. ছারপোকার হাত থেরে রেহাই পেতে আপনার বিছানা দেয়াল থেকে দূরে স্থাপন করুন। শোবার আগে ও পরে বিছানা ভালো করে ঝেড়ে ফেলুন সাথে পরিষ্কার পরিছন্ন থাকুন।

৩. ঘরের যে স্থানে ছারপোকার বাস সেখানে ল্যাভেন্ডার অয়েল স্প্রে করুন। দুই থেকে তিনদিন এভাবে স্প্রে করার ফলে ছারপোকা আপনার ঘর ছেড়ে পালাবে।

৪. এক লিটার পানিতে ডিটারজেন্ট যেমন সার্ফ এক্সেল ঘন করে মিশিয়ে স্প্রে করুন। এ উপায়ে স্প্রে করার ফলে ছারপোকা সহজেই মারা যাবে।

৫. বিছানাসহ অন্যান্য জায়গা থেকে ছারপোকা তাড়াতে সারা ঘরে ভালো করে ভ্যাকুয়াম করুন। ভ্যাকুয়াম করার সময় খেয়াল রাখুন যাতে ঘরের মেঝেও বাদ না পড়ে। এতে করে আপনার ঘরে ছারপোকার আক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে।

৬. আপনার ঘরের ছারপোকা তাড়াতে অ্যালকোহল ব্যবহার করতে পারেন। ছারপোকা প্রবণ জায়গায় সামান্য অ্যালকোহল স্প্রে করে দিন দেখবেন ছারপোকা মরে যাবে।

৭. ছারপোকা মোটামুটি ১১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রাতে মারা যায়। ঘরে ছারপোকার আধিক্য বেশী হলে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কাঁথা ও ঘরের ছারপোকা আক্রান্ত জায়গাগুলোর কাপড় বেশী তাপে সিদ্ধ করে ধুয়ে ফেলুন। ছারপোকা এতে মারা যাবে।

৮. দোকান থেকে পোকামাকড় মারার ঔষধ কিনে ঘরে রাখুন। এবং সন্দেহজনক স্থানে কিছুটা স্প্রে করে দিন। তবে সাবধান থাকবেন পোকা মারার ঔষধের ক্ষেত্রে। মানুষের সংস্পর্শে না আসাই ভাল।

Monday, July 11, 2016

ফ্রিজে কাঁচা মাছ রেখেও স্বাদ অটুট রাখার পদ্ধতি!

যারা মাসের বাজার একবারে করেন তাদের অনেক সময়ই ডীপ ফ্রিজে কাঁচা মাছ রাখতে হয়। যার ফলাফল কিছুদিন ফ্রিজে মাছ রেখে দিলেই মাছের স্বাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। খেতে শুকনো লাগে এবং গন্ধ বেশি লাগে। বেশীদিন রেখে দিলে মাছ খাওয়াই যায় না, ফেলে দিতে হয়। কিন্তু এই সমস্যার রয়েছে খুবই সহজ ছোট্ট একটি সমাধান।
আপনি চাইলেই মাছের তাজা ভাব ফিরিয়ে আনতে পারেন খুব সহজে। জানতে চান কীভাবে?
মাছের তাজা স্বাদ পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে দুধ। প্রথমে ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে ঠাণ্ডা ছাড়িয়ে নিন। এরপর মাছের পিসগুলো একটি বড় বাটিতে দুধ মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন প্রায় ৩০ মিনিট। তারপর স্বাভাবিক ভাবে ধুয়ে রান্না করুন।
দেখবেন মাছের তাজা স্বাদ ফিরে এসেছে এবং আঁশটে গন্ধও নেই একেবারেই। দারুণ, তাই না?

চিরতরে মেছতার দাগ দূর করার ২টি সহজ উপায়।

বকের যে সম্যসাগুলো সবচেয়ে মারাত্নক এবং বিরক্তিকর তার মধ্যে মেছতা অন্যতম। মুখে কালো বা বাদামী রঙের যে ছোপ ছোপ দাগ পড়ে তাকে মেছতা বলা হয়। প্রায় সব বয়সী নারীদের ত্বকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘরোয়াভাবে কিছু প্যাক ব্যবহার করলে এই দাগ দূর করা সম্ভব।

মেছতার কারণ –

১। মেছতার প্রধান এবং মূল কারন হল সূর্যের আলো। কোন প্রতিরক্ষা ছাড়াই অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে গেলে এটি হতে পারে।
২। জন্ম নিয়ন্ত্রের পিল খেলে
৩। থাইরয়েড সমস্যা
৪। হরমোনের তারতম্য
৫। বংশগত কারণে
৬। ত্বক নিয়মিত ভালভাবে পরিষ্কার না করলে
৭। অতিরিক্ত চিন্তা, কাজের চাপ, কম ঘুম ইত্যাদি।
এই সকল কারণে সাধারণত মেছতা হয়ে থাকে। এছাড়া আরোও অনেক কারণে মেছতা হতে পারে। স্কিন ট্রিটমেন্ট, ক্রিম ছাড়াও ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই দাগ দূর করা সম্ভব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মেছতা দূর করার সহজ এবং কার্যকরী ২টি প্যাকের কথা।

১। লেবুর রস –

লেবুর রসে আছে ত্বক ব্লিচিং করার উপাদান যা ত্বকের যে কোনো প্রকার দাগ দূর করে থাকে। এছাড়া লেবুর রস ব্যবহারে ত্বক নরম কোমল হয়ে উঠে।
  • ত্বকে কালো বা খয়েরী দাগে আক্রান্ত জায়গায় লেবুর রস দিয়ে দিন। ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন করুন। ২ মাসের মধ্যে আপনি পার্থক্য দেখতে পারবেন। সেনসিটিভ ত্বকের অধিকারীরা সরাসরি লেবু ব্যবহার না করে সাথে মধু ও গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
  • আরেকভাবে লেবুর রস ব্যবহার করা যেতে পারে। লেবুর রসের সাথে পরিমাণ মতো চিনি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করে নিন। এবার পেস্টটি ত্বকে না মিলে যাওয়া পর্যন্ত ঘষুন। বিশেষ করে ত্বকের খয়েরী দাগের জায়গাগুলোতে ভাল করে ম্যাসাজ করে নিন। ৫-১০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে কয়েকবার করুন। আপনি চাইলে এতে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।

২। চন্দন –

চন্দনে অ্যান্টি এইজিং এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান আছে যা ত্বকের হাইপারপিগমেনশন কমিয়ে মেছতার দাগ দূর করে থাকে।
  • ২ টেবিল চামচ চন্দনের গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, এবং লেবুর রস দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। এবার এই প্যাকটি কালো বা খয়েরী দাগের ওপর লাগান। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কয়েকবার এটি করুন।
  • ১ টেবিল চামচ কমলার রস, ১ চা চামচ লেবুর রস, ভিটামিন ই, ২ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। ভাল করে এই প্যাকটি মুখে লাগান। আধা ঘন্টার পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করুন। আর দেখুন পার্থক্য।
  • প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চন্দন পাউডার, অলিভ অয়েল, বাদাম অয়েল মিশিয়ে মুখে ম্যাসাজ করতে পারেন। সারারাত রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে ফেলুন।

Friday, July 8, 2016

বেকার সমস্যার সমাধান

আপনি জানেন কি আধুনিক পদ্ধতিতে ১০০টি ব্লেক বেঙ্গল / দেশীয় ছাগল পালন করে
১ বৎসরে ২৫ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব ।
মোবাইল - 01990198469, বিস্তারিত পদ্ধতি নিচে।
নুতন উদ্যোক্তাদের জন্য আমাদের ফামর্ে এক মাস মেয়াদি ফ্রি ট্রেনিংয়ের ও ফ্রি থাকার ব্যাবস্থা আছে।

ট্রেনিংয়ের জন্য যোগ্যতা কি?
১) বাংলা পড়তে ও লিখতে জানতে হবে ।
২) ইন্টারনেটের ব্যবহার জানলে বেশী ভালো হয়।
৩) নিজ হাতে ১০০ ছাগলকে খাবার দেওয়া , ও পরিচযর্ায় করতে হবে, তখনি আপনি জেনে যাবেন আপনি পরবেন কি পারবেন না।
ফামর্ শুরু করতে যা যা লাগবে ।
৪) ঘর তৈরির জন্য ২ শতাংশ বা ৩ কাঠা জায়গা।
৫) হাইবি্রড ঘাস / নেপিয়ার ঘাস উৎপাদনের জন্য ৩০ শতাংশ বা ১ বিঘা জমি।
৬) আধুনিক ছাগল পালন পদ্ধতি সমন্ধে বাস্তব জ্ঞান বা হাতে কলমে ট্রেনিং।
ফোন - ০০65 8328 0194
Viver - 0065 8328 0194
WhatsApp - 006583280194
Imo -006583280194
৪ লাখ ৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে যাবার কথা ভাবছেন ?
আপনার বন্দু বান্ধব বা আত্তীয় যারা বিদেশে আছে তাঁদের কাছথেকে সত্যিকথাটি জেনেনিন তারা বাৎসরিক কি পরিমান আয় করছেন , আর দিন রাত কি পারিমান অমানসিক পরিশ্রম তারা করছেন। প্রয়োজনে আমাদের আইডিয়াটা তাঁদের সাথে শেয়ার করুন এবং তাঁদের মতামত নিন।
আপনারা যারা টাকা নিয়ে বসে আছেন ব্যবসা করার জন্য, কি ব্যাবসা করবেন খুজে পাচ্ছেন না , লাভ লোকসানের হিসেব মিলছে না তারা দয়াকরে একটু পড়ে দেখবেন।
প্রথমে অন্য ফামর্ হতে ১০০ দেশীয় জাতের প্রাপ্ত বয়স্ক ব্লেক বেঙ্গল (পিউর ব্রীড/ অরিজনাল জাতের )
ডো/ মহিলা/পাঠি ছাগল সংগ্রহ করতে হবে। যাতে আপনার ফামর্ে আনার কিছু দিনের মধ্যে গভর্বতী হতে শুরু করে।
ফামর্ হতে সংগ্রহ করলে দাম একটু বেশী হবে , কিন্তু সুস্থ সবল টিকা দেওয়া ও একই বয়সী পাবেন।
অন্য ফামর্ের দাম আমাদের জানা নেই,
আমাদের ফামর্ে প্রতি পিছ -৩৫০০ টাকা ।
সবর্ নিন্ম অডর্ার ২০ পিছ, কোন ডেলীভারী দেওয়া হয় না , আসার সময় পিকআপ নিয়ে অসতে হবে ।
ট্রেনিংয়ের করার পর ইচ্ছে করলে আপনি নিজে এলাকার বাজার হতে সঠিক জাত চিনে সুস্থ সবল দেখে ছাগল কিনতে পারেন , তাঁতে কিছুটা দাম কম লাগবে ।
কিন্তু মনে রাখবেন , অসুস্থ না হলে বা খুব বেশী টাকার প্রোয়োজন না হলে সাধারানত বাজারে কোন ব্যক্তি ডো/ মহিলা/পাঠি বিক্রী করে না । সেই ক্ষেত্রে বাজার হতে খুব সতকর্ার সাথে কিনতে হবে ।
আর এদেরকে প্রজনন করার জন্য ১টি উন্নত জাতের পাঠা /বাক সংগ্রহ করতে হবে।
ছাগল বৎসরে ২ বার ২টি করে বাচ্চা দেয় তা হলে ১০০ ছাগল এক বৎসরে ৪০০ টি বাচ্চা দিবে, উন্নত জাতের পাঠা দিয়ে প্রজনন করানো হলে ৫-৬ মাস বয়সে বাচ্চা গুলো ২০-২২ কেজী হবে।
২০ কেজী ওজনের ছাগল হতে ১৪ কেজী মাংস
হবে, ৫০০ টাকা কেজী হিসেবে ১৪ কেজী মাংসের দাম ৭০০০ টাকা ।
তাহলে ৪০০ বাচ্চা ৭০০০ টাকা হিসেবে ৪০০x৭০০0=2৮00000 (2৮ লক্ষ টাকা) বিক্রি হবে।
এ বার আসি খরচ এ , একজন কর্মচারি মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে ১২০হাজার টাকা, ঔষধ ৩০ হাজার টাকা, ফামর্ের উন্নয়ন খরচ ১৫০ হাজার টাকা
টোটাল খরচ = ৩ লক্ষ টাকা
মোট মুনাফা ২৮-৩=২৫ লক্ষ টাকা ।
আর একটি কথা মনে করিয়ে দেই , আপনি মূলধন হিসেবে যে ছোট ছাগল গুলো কিনছিলেন সে গুলো ছোট হতে বড় হওয়াতে মূলধনের পরিমাণ ও বেড়েছে।
যেভাবে করবেন ।
১) প্রথমে ৩০ শতাংশ জমিতে নেপিয়ার চাষ শুরু করবেন। সঠিক পরিচযর্ায় নেপিয়ার ৪০-৪৫ দিনে পূনাঙ্গ হবে।
২) একই সময়ে আপনাকে ১০ কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক ঘর তৈরি করতে হবে, ঘর তেরীতে যা লাগবে, ১হাজার ইট, ২০ টি নেট, ১৮ টি সিমেন্টের খুঁটি, গ্রীল বা বাঁশ আর প্রয়োজনীয় টিন।
৩) দেশীয় জাতের ছাগল ১০০টি ।
৪) একটি উন্নত জাতের পাঠা/ বাক ।
এখন চিন্তা করছেন সবই তো বোঝলাম, তার পর আমি করলে যদি না হয় ভাই?
বা
আপনার আইডিয়াটা ভাল আমার পছন্দ হয়েছে , কিন্তু করতে যে টাকা লাগবে তা তো নাই।
উপরের এই ২ সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা হেল্প করি।
তা হলে আপনি নিজে চলে আসুন আমাদের ফামর্ে, নিজে কিছু ছাগল কিনে শুরু করে দিন আমাদের সাথে , আমাদের ঘর, আমাদের ঘাস , আমাদের পাঠা সবই ব্যাবহার করতে পারবে, শুধু মাএ আপনার ডো/ মহিলা/পাঠি ছাগল গুলো আমাদের পদ্ধতিতে পালন করতে হবে , কিছু দিন পর আপনি যখন কনফিডেন্ট হয়ে যাবেন , আপনার বাড়িতে শুরু করে দিন আধুনিক ফামর্ ।
এখন তো সব ই বোঝলাম , বলেন তো ভাই আপনার মূল উদ্দেস্য টা কি , বাংঙ্গালী তো লাভের ব্যাবসা কারো সাথে শেয়ার করে না ।
মূল উদ্দেশ্য তে যাওয়ার আগে আপনার পালন করা ছাগল কোথায় বিক্রি করব তা জেনে নেই।
সরকারি হিসাব আনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংক্ষ্যা কম বেশী ১৬ কোটি।
প্রতিপরিবারে জনসংক্ষ্যা ৪-১০ জন।
আমরা যদি ১০ জন হিসেবে প্রতিটিপরিবার হিসাব করি তা হলে দেশে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ পরিবার আছে।
১০ জনের প্রতিটিপরিবার যদি মাসে ১ কেজী করে খায় , তাহলে প্রতি মাসে বাজারের চাহিদা ১ কোটি ৬০ লক্ষ কেজী । বিয়ে, বৌভাত, সুন্নতে খৎনা , সামাজিক অনুষ্ঠান হোটেলের হিসাব না ই করলাম,
১যদি ও বাস্তবে ১ কেজীতে মাংসতে ১০ জন লোকের এক বেলা ও হবে না।
তাহলে প্রতিটি ছাগল হতে যদি ১৪ কেজি মাংস হয় ১ কোটি ৬০লাখ পরিবারের জন্য মাসিক চাহিদা = ১১ লক্ষ ৪২ হাজার ছাগল ।
তাহলে বাৎসরিক চহিদা ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ছাগল ।
প্রতিটি ফামর্ যদি বৎসরে ৪০০ করে ছাগল উৎপাদন করে ,বৎসরিক ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ছাগল উৎপাদন করতে ৩৪ হাজার ২৫০ টি ফামর্ প্রয়োজন।
মূল উদ্দেস্য হল :
১) নুতন একটি শিল্প তৈরি করা ।
২) ৩৪ হাজার মালিক + ৩৪ হাজার কমর্চারী = ৬৮ হাজার লোকের কমর্সংস্থান তৈরি করা ।
আনেকে হয়ত ৬৮ হাজারের হিসাব কোথায় পেলাম চিন্তা করছেন সেটা উপরে আছে ।
৩) আর আমদের নিজে কিছু ইনকাম করা । তা ও বলেদিচ্ছি কি ভাবে , আপনার যদি ফামর্ থকে, নিশ্চই বৎসরে ২/৩বার বিক্রি করবেন, ১০০ ছাগল বজরে নিতে কম পক্ষে ১০০০ টাকা খরচ হবে, আর আপনি যদি আমাদের সাথে যুক্ত থাকেন , আর আমরা যদি আপনার ছাগল বড়িতে রেখে বিক্রি করে দিতে পারি , আর আপনার বাজারে নেওয়ার খরচ টা আমি চাই , মনে হয় বেশী অন্যায় হবে না।
তা হলে আমাদের বাৎসরিক আয় হবে ৩৮০০০x১০০০ =৩,৮০,০০০০০ মোট ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ।
আমাদের ফামর্ সমন্ধে জানতে চান
www.facebook.com/boergoats.bd

Thursday, June 30, 2016

টুথপেস্ট দিয়ে এই ১০টি দুর্দান্ত কাজও করা যায়! আপনি জানতেনই না

দাঁত ব্রাশ করার জন্য টুথপেস্টের ব্যবহারের কথা আমরা সবাই জানি। মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে টুথপেস্ট অপরিহার্য। কিন্তু জানেন কি, টুথপেস্টের আরও নানাবিধ ব্যবহার সম্ভব যেগুলির সঙ্গে মুখের বা দাঁতের কোনও সম্পর্কই নেই। এখানে রইল সেরকমই ১০টি ব্যবহারের কথা—
১. মোবাইল স্ক্রিন পরিষ্কার:
যেসব মোবাইলে স্ক্রিন গার্ড থাকে না, সেগুলির স্ক্রিনে নানা রকমের আঁচড়ের দাগ পড়ে যায়। এই ধরনের মোবাইলের স্ক্রিনে অল্প একটু টুথপেস্ট লাগিয়ে আঙুল দিয়ে ঘষে দিন। তারপর একটা কাপড়ের টুকরো সামান্য জলে ভিজিয়ে স্ক্রিনটি মুছে নিন। দেখবেন, স্ক্রিনটি পরিষ্কার যেমন হয়েছে, তেমনই আঁচড়ের দাগগুলিও অনেকটা আবছা হয়ে এসেছে।
২. দেওয়ালে প্যাস্টেলের আঁকিবুঁকি তোলা:
বাড়িতে বাচ্চা থাকলে দেওয়ালে রং পেন্সিল বা প্যাস্টেল দিয়ে আঁকিবুঁকি কাটবেই। কী ভাবছেন, দেওয়াল নতুন করে রঙ করানোই এই দাগ থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায়? মোটেই না। একটু টুথপেস্ট দেওয়ালে প্যাস্টেলের দাগের উপর লাগিয়ে একটি সামান্য ভেজা কাপড় দিয়ে ঘষে দিন। তারপর একটা পরিস্কার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন জায়গাটা। দাগ উধাও হবে।
৩. জামাকাপড়ের দাগ তোলা:
কাপড়-জামায় তেল, মশলা বা কালির দাগ লেগে গিয়েছে? সাবান জলে ধুয়েও যাচ্ছে না? চিন্তা নেই, অল্প একটু টুথপেস্ট দাগ-লাগা জায়গাটিতে ঘষে নিন। তারপর স্বাভাবিক ভাবে সাবান জলে ধুয়ে নিন। দেখবেন, দাগ চলে গিয়েছে।
৪. বাচ্চাদের বোতলের দুর্গন্ধ দূর করা:
বাচ্চাদের ফিডিং বটলে একটা বিশ্রী দুর্গন্ধ হয় যা ধুলেও যায় না। সেক্ষেত্রে বোতলটিতে অল্প জল দিন, তারপর বোতলের ভিতর একটু টুথপেস্ট ফেলে বোতলের মুখ বন্ধ করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে জলটা ফেলে দিয়ে পরিস্কার জলে বোতলটা ধুয়ে নিন। দেখবেন, দুর্গন্ধ দূর হয়ে গিয়েছে।
৫. পোকামাকড়ের কামড়ের জ্বালা কমানো:
মশা, পিঁপড়ে বা মৌমাছি জাতীয় পোকা কামড়ানোর পর সেই জায়গায় যদি অল্প একটু টুথপেস্ট লাগিয়ে দেন, দেখবেন কামড়ের জ্বালা অনেক কমে গিয়েছে।
৬. ফোস্কার যন্ত্রণা কমানো:
ফোস্কা পড়ে গেলে সেই জায়গায় অল্প একটু টুথপেস্ট লাগিয়ে দিলে দেখবেন ফোস্কার জ্বালা, যন্ত্রণা দু’টো থেকেই মুক্তি পাবেন।
৭. হাতের দুর্গন্ধ দূর করা:
ভারতীয়দের অভ্যাস হাত দিয়ে খাওয়া। কিন্তু অনেক সময়েই খেয়ে উঠে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার পরেও হাত থেকে যেতে চায় না তেল মশলা বা কাঁচা পেঁয়াজের গন্ধ। সেক্ষেত্রে খেয়ে উঠে অল্প একটু টুথপেস্ট ঘষে নিন হাতে, তার পরে স্বাভাবিকভাবে সাবানে ধুয়ে ফেলু‌ন হাত। দেখবেন, হাতে কোনও দুর্গন্ধ আর নেই।
৮. নখ পরিস্কার:
নখের উপর একটু টুথপেস্ট লাগিয়ে টুথব্রাশ দিয়ে অল্প ঘষে নিন। এতে শুধু যে নখ পরিস্কার হবে তা-ই নয়, পাশাপাশি নখ চকচকেও হবে।
৯. হেয়ার জেল হিসেবে কাজ করা:
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটা সত্যি যে, হেয়ার জেল যে উপাদান দিয়ে তৈরি হয় সেই একই উপাদান দিয়ে তৈরি হয় টুথপেস্ট। কাজেই চান করার সময়ে টুথপেস্ট দিয়ে চুল ধুলে চুলের কোনও ক্ষতি তো হবেই না, বরং কম খরচে ভাল থাকবে চুল।
১০. বাথরুম বা রান্নাঘরের বেসিন পরিস্কার:
বাথরুম বা রান্নাঘরের বেসিনে সামান্য টুথপেস্ট লাগিয়ে একটি স্ক্রাবার দিয়ে আলতো ঘষে নিন। দেখবেন, ঝকঝক করছে বেসিন।