Friday, December 5, 2014

গুগল অ্যাডসেন্স

গুগল অ্যাডসেন্স

অ্যাডসেন্স হলো সার্চ ইঞ্জিন গুগল পরিচালিত একটি ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। একটি ওয়েবসাইটের মালিক কিছু শর্তসাপেক্ষে তার সাইটে গুগল নির্ধারিত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে তা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারে। আউটসোর্সিং ছাড়া অন্য সব কাজের মধ্যে সবচেয়ে ভালো হলো গুগল অ্যাডসেন্স। গুগল অ্যাডসেন্সে অ্যাকাউন্ট খোলার ঠিকানা হলো :
www.google.com/adsense/signup

গুগল অ্যাডসেন্স কী?

আমরা জানি, কোনো কিছু প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ইন্টারনেটে অনেক ওয়েবসাইট আছে। কেউ যদি তার ওয়েবসাইটের প্রচার আরও বাড়াতে চায় তাহলে সে গুগলের কাছে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। গুগল সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে অন্যান্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে দেয়। গুগল যার কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয় তার কাছ থেকে পেমেন্ট পায়, আর যার সাইটে বিজ্ঞাপন দেয় তাকে পেমেন্ট দেয়। গুগল এখানে একটি মিডিয়া হিসেবে কাজ করে এবং কমিশন রাখে। যে কেউ ইচ্ছা করলে তার সাইটে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য গুগলের কাছে আবেদন করতে পারে। গুগল তখন তার সাইট যাচাই করে দেখে। সাইট যদি গুগলের নিয়মনীতি সমর্থন করে তাহলে গুগল ঐ সাইটে বিজ্ঞাপন দেয়। যার সাইটে গুগল বিজ্ঞাপন দেয় তাকে গুগল নির্দিষ্ট পরিমাণ পেমেন্টও দেয়। বিজ্ঞাপন দেয়া-নেয়ার এই প্রক্রিয়াটিকেই গুগল অ্যাডসেন্স বলে।

গুগল অ্যাডসেন্স কীভাবে পাওয়া যায়?

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনার ভালো একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকতে হবে। তারপর সেই ওয়েবসাইট বা ব্লগের ঠিকানা দিয়ে গুগলের কাছে আবেদন করবেন। গুগল তখন ঐ ওয়েবসাইট বা ব্লগ যাচাই করে দেখবে। যাচাই করার পর গুগলের পছন্দ হলে গুগল অ্যাডসেন্সে আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভ করবে। অ্যাডসেন্সের ঐ অ্যাকাউন্টে অ্যাডের অনেক কোড পাওয়া যায়। অ্যাডের ঐ কোড আপনার ওয়েবসাইটে বা ব্লগে বসাবেন। যখন কোনো ভিজিটর আপনার সাইট বা ব্লগ ভিজিট করবে তখন যদি ঐ ভিজিটর অ্যাডের কোনো কোডে ক্লিক করে তাহলে আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট হারে পেমেন্ট (ডলার) যোগ হতে থাকবে। মাস শেষে আপনি সেগুলো তুলে আনতে পারবেন। তবে সাবধান! নিজের সাইটের অ্যাডে কখনো নিজে ক্লিক করবেন না। নিজের সাইটের অ্যাডে ক্লিক করলে গুগল ওই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেবে। এমনকি অন্য কারো কম্পিউটার থেকেও ক্লিক করবেন না। কারণ গুগল Natural এবং Spam ক্লিকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে।

সহজে গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার টিপস

১. সহজে গুগল অ্যাডসেন্সের অ্যাকাউন্ট পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটি হতে হবে একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর। যেমন : আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগটি যদি হয় কম্পিউটার টিপস এর ওপর তাহলে আপনার সকল আর্টিকেল, পোস্ট, পেইজ ইত্যাদি হবে কম্পিউটার টিপসসংক্রান্ত। সুতরাং অ্যাডসেন্স পাবার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ওয়েবসাইট থাকতে হবে।
২. যে বিষয়টির ওপর ওয়েবসাইট তৈরি করবেন ওয়েবসাইট নামও দিতে পারেন সেই রিলেটেড। যেমন : www.computertips.com অথবা www.abcomputertips.com। সাধারণত ফ্রি ব্লগিং বা সাব-ডোমেইন-এর মাধ্যমে অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করলে গুগল এগুলোকে কম গুরুত্ব দেয়। তাই সহজে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়ার জন্য টপ লেভেল ডোমেইন (যেমন : .com, .org ইত্যাদি) নির্বাচন করুন। আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন মোটামুটি প্রফেশনাল হলে ভালো হয়। এ ক্ষেত্রে সুন্দর কোনো টেমপ্লেট বা থিম ব্যবহার করতে পারেন। গুগল কোনো ওয়েবসাইটকে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট দেওয়ার আগে এই বিষয়গুলো খেয়াল করে।
৩. আপনার ওয়েবসাইটে বিষয়বস্তু সম্পর্কিত সুন্দর একটি লোগো যোগ করতে পারেন। কারণ এটা ইন্টারনেটে আপনার কোম্পানি বা ওয়েবসাইট সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা প্রকাশ করবে এবং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি যে প্রফেশনাল, তা প্রকাশ পাবে।
৪. অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে Indexing অর্থাৎ গুগলের ডেটাবেইজ লিপিবদ্ধ করা উচিত। আর দ্রুত Indexing করার জন্য আপনি গুগল ওয়েবমাস্টার টুলে সাইট ভেরিফাই করে নিন। এ সময় আপনার ওয়েবসাইটের এক্সএমএল সাইটম্যাপটি যোগ করে দিন। এই প্রক্রিয়ায় ২৪ ঘণ্টার ভেতর আপনার ওয়েবসাইট গুগলে Indexing হয়ে যাবে। এসইওর জন্যও সাইটম্যাপ একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়। কীভাবে সাইটম্যাপ তৈরি করতে হয় এবং ওয়েবমাস্টার টুল দিয়ে ভেরিফাই করতে হয় তা ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন। ইউটিউবে সার্চ দিলেই এ সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো ভিডিও পাবেন।
৫. গুগল আসলে ভিজিটর খোঁজে। যদি আপনার সাইটে ভালো ভিজিটর থাকে তাহলে আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাওয়া কঠিন কিছু না। তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন অন্তত কিছু ইউনিক ভিজিটর আনার। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন যদি কিছু সোশ্যাল বুকমার্কিং করেন তাহলে ভালো ভিজিটর পাবেন।
৬. আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট হতে হবে ইউনিক। কনটেন্ট যত বেশি হবে ততই ভালো। কনটেন্ট বা আটিকেল কেমন হবে তা জানার জন্য অ্যাডসেন্সের Terms And Condition ভালোভাবে পড়ে নিন। এসইওতে বলা হয়ে থাকে ‘কনটেন্ট ইজ কিং’ তাই আপনার আর্টিকেলগুলো ১০০% ইউনিক হলে এসইওর জন্য ভালো। আর মনে রাখবেন ডুপ্লিকেট (কপি করা) আর্টিকেল ব্যবহার করলে গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দিতে পারে। বিস্তারিত জানার জন্য নিচের দুটি ঠিকানায় গিয়ে পড়ে দেখতে পারেন।
https://support.google.com/adsense/answer/48182
https://www.google.com/adsense/localized-terms
৭. আপনার সাইটের প্রতিটি পেইজের জন্য On page SEO ঠিক করে নিন। প্রত্যেক পেইজের জন্য পেইজের সাথে সম্পর্কযুক্ত টাইটেল দিন। আকর্ষণীয় মেটা ডেসক্রিপশন ব্যবহার করুন।
৮. অনেক সময় দেখা যায় ব্লগের বা ওয়েবসাইটের কন্টাক্ট পেইজ, প্রাইভেসি এবং পলেসি পেইজ না থাকার কারণে গুগল অ্যাডসেন্স দেয় না। তাই একটা কন্টাক্ট পেইজ এবং একটা প্রাইভেসি এবং পলেসি পেইজ করে নেবেন। যাদের সাইটে প্রাইভেসি এবং পলেসি পেইজ নেই তারা এই লিংক থেকে করে নিতে পারেন। www.serprank.com/privacy-policy-generator/
উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে খুব সহজেই আপনি একটি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের মালিক হতে পারেন। অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে ভালোভাবে এসইও করতে হবে অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ভিজিটর আসবে তত বেশি ক্লিক পড়ার সম্ভাবনা থাকবে, তত বেশি আয় হবে।
গুগল অ্যাডসেন্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে নিচের ঠিকানায় যেতে পারেন বা গুগলে সার্চ দিতে পারেন।

No comments:

Post a Comment